Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
State News

মা-বাবার পোড়া-পচা শরীর দু’টো আর দেখতে চান না, সৎকারের জন্যই অপেক্ষা তাঁর

যত ঘুরছেন, ততই মনে মনে পড়ে যাচ্ছে একটাই দৃশ্য। রবিবার রাতে বাড়ি ফিরে বাবার জ্বলে যাওয়া পায়ের ওপর হোঁচট খাওয়া। সারা রাত পোড়া চামড়ার গন্ধ শুঁকেই রাত কেটেছিল। কেউ আসেনি। পুলিশও না। সকালে ডায়েরি পর্যন্ত নিতে চায়নি পুলিশ।

দীপঙ্কর দাস।

দীপঙ্কর দাস।

স্যমন্তক ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

বিধ্বস্ত। ক্লান্ত। কোটরে ঢুকে যাওয়া চোখে ৭২ ঘণ্টার অনিদ্রা। ইতিহাসে ৫৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্নাতক দীপঙ্কর দাস পুলিশ হতে চেয়েছিলেন। ইচ্ছে ছিল আরও পড়াশোনা করার। এক রাতের অভিজ্ঞতায় সেই সমস্ত স্বপ্ন পুড়ে গিয়েছে। কাকদ্বীপের জ্বলে যাওয়া দেবপ্রসাদ আর উষা দাসের ছেলে আপাতত গোপন আস্তানায় প্রহর গুনছেন।

গোপন কেন? দীপঙ্কর বললেন, ‘‘আমার লাইফ-থ্রেট হয়ে গিয়েছে।’’ সে জন্যই বুধবার পর্যন্ত প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো বছর উনিশের তরুণ বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্ট থেকে বেরনো ইস্তক বেপাত্তা।

সাক্ষাৎকারপ্রার্থী সাংবাদিককে বলা হল, মেট্রোপলিটন বাইপাসের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অপেক্ষা করতে। খানিক বাদে সেখানে পৌঁছলেন দীপঙ্কর। গাড়িতে বসে সাক্ষাৎকার দিলেন। কালো কাচ তুলে। বললেন, তিনি রাজনীতি বোঝেন না। কিন্তু বাবা-মায়ের মতো মরতেও চান না। দীপঙ্করের অভিযোগ, দু’দিন ধরে দেহ নিয়ে রাজনীতি চলছে। আদৌ দেহ পাবেন কি না, তা-ও বুঝতে পারছেন না। যত ঘুরছেন, ততই মনে মনে পড়ে যাচ্ছে একটাই দৃশ্য। রবিবার রাতে বাড়ি ফিরে বাবার জ্বলে যাওয়া পায়ের ওপর হোঁচট খাওয়া। সারা রাত পোড়া চামড়ার গন্ধ শুঁকেই রাত কেটেছিল। কেউ আসেনি। পুলিশও না। সকালে ডায়েরি পর্যন্ত নিতে চায়নি পুলিশ।

আরও পড়ুন: প্রত্যাশিত জয়, তবু পূর্ণগ্রাস হল না

এর পরে জল গড়িয়েছে অনেক। দেহ নিয়ে মামলা উঠেছে আদালতে। চলছে রাজনীতি, চাপানউতোর। সবই বুঝতে পারছেন দীপঙ্কর। সন্ত্রস্ত গলায় তাঁর শেষ বাক্য, ‘‘পোড়া, পচা শরীর দু’টো আর দেখতে ইচ্ছে করছে না। সৎকারের জন্যই অপেক্ষা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE