Advertisement
১৬ মে ২০২৪
State News

প্রথম বার ভোটে লড়েই জয়, দেখে গেলেন না বিপ্লব

ভোটের দিন দলের নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে বসেছিলেন প্রার্থী। হঠাৎ লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে চড়াও হয় কিছু লোক। শুরু হয় বেধড়ক মারধর। জ্ঞান হারান হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব সরকার (৪১) কোমায় চলে গিয়েছিলেন।

বিপ্লব সরকার

বিপ্লব সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৫:৪১
Share: Save:

ভোটের দিন দলের নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে বসেছিলেন প্রার্থী। হঠাৎ লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে চড়াও হয় কিছু লোক। শুরু হয় বেধড়ক মারধর। জ্ঞান হারান হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব সরকার (৪১) কোমায় চলে গিয়েছিলেন। কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। শুক্রবার সকালে মারা গিয়েছেন বিপ্লব। বৃহস্পতিবার ভোটের ফল বেরোনোর পরে জানা যায়, ৭৩৭টি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি।

বিপ্লবকে খুনের ঘটনায় ৫ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিরা শীঘ্রই ধরা পড়বে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। এই নিয়ে সোমবার, পঞ্চায়েত ভোটের দিন হাবড়ায় তৃণমূলের তিন কর্মী-সমর্থক মারা গেলেন গণপ্রহারে।

পঞ্চায়েত ভোটে হাবড়ায় মারকাটারি ফলাফলের পরেও যে কারণে ফুঁসছে শাসক শিবির। তিনটি খুনের ঘটনায় বিজেপির দিকেই সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলছে তৃণমূল। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এ বার থেকে বিজেপিকে আর ছেড়ে কথা বলব না আমরা। রাস্তায় রাস্তায়, পাড়ায় পাড়ায় লড়াই হবে। মাছের মতো পাঁকে পুঁতে ফেলব ওদের।’’

গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ বিজেপি। দলের জেলা সহ সভাপতি বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘জনরোষেই এই মৃত্যু। আমরা খুনের রাজনীতি করি না।’’

বেড়গুমের সরকার পাড়ায় থাকতেন বিপ্লব। জমি রেজিস্ট্রির কাজ করতেন। আড়াই বছরের ছেলে আর ছ’বছরের মেয়েকে নিয়ে সংসার। মিটিং-মিছিলেও তাঁকে বিশেষ দেখা যেত না বলে জানাচ্ছেন এলাকার লোকজন। ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন প্রথমবার। তবে এলাকায় জনসংযোগ ছিল। একটি স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক ছিলেন। একটি সমবায় সমিতিরও সম্পাদক ছিলেন। অমায়িক ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন এলাকায়।

এমন একজন মানুষ হঠাৎ জনরোষের শিকার হবেন কেন?

স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোটের দিন বাইরে থেকে আসা কিছু লোক এলাকায় ঢুকে হুজ্জুত চালাচ্ছিল। বিজেপির এক কর্মীকে মারধর করে তারা। এরপরেই কিছু লোক চড়াও হয় জামতলায় বুথের কাছে তৃণমূলের দলীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে। সেখানে বিপ্লব-সহ কয়েকজন নেতা-কর্মী ছিলেন। আক্রান্ত হন তাঁরা। পুলিশ জানায়, রক্তাক্ত অবস্থায় বিপ্লবকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। পরে পাঠানো হয় কলকাতায়।

শুক্রবার সন্ধের দিকে ময়না-তদন্তের পরে দেহ পৌঁছয় এলাকায়। দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল সেখানে। দলের বহু নেতানেত্রীও হাজির ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE