Advertisement
E-Paper

সুবিচারের আর্জি, ভরা এজলাসে সরব ভারতী

হঠাৎ হাজির ভারতী ঘোষ, জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার। পরনে উর্দি। সামনে-পিছনে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩১
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সেই এক আদালত। এক মানুষ। তবে বদলে গিয়েছে ভূমিকা।

২০১৫ সালের ১২ অগস্ট। সবং কলেজে ছাত্র খুনের মামলায় এক সাক্ষী গোপন জবানবন্দি দিতে এসেছিলেন মেদিনীপুর আদালতে। হঠাৎ হাজির ভারতী ঘোষ, জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার। পরনে উর্দি। সামনে-পিছনে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী।

শনিবার ফের মেদিনীপুর আদালতে এলেন ভারতী। এখন তিনি সোনা-প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভারতীকে এখন গ্রেফতার করা যাবে না। তাই স্বচ্ছন্দেই আদালতে এসেছেন তিনি। বিচারকের কাছে সময় চেয়ে কথাও বলেছেন। স্পষ্ট করেছেন, ‘‘আমি যতদূর পারব লড়ব।’’ সঙ্গে আর্জি, ‘‘সব দেখে বিচার করুন।’’

প্রাক্তন আইপিএস ভারতী এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। দু’দিন আগে ঝাড়গ্রামে বিজেপি-র কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন। এ বার এলেন পশ্চিম মেদিনীপুরে। মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অরুন্ধতী ভট্টাচার্যের এজলাসে দাসপুরের সোনা-প্রতারণা মামলার শুনানি ছিল এ দিন। মেদিনীপুর আদালতই ভারতীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। হুলিয়াও জারি হয়। এ দিন ওই পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানান ভারতীর আইনজীবীরা। তা খারিজ হয়েছে।

এ সবের ফাঁকেই নিজের কথা বলেন ভারতী। বেলা তখন সাড়ে ১১টা ৪০। ভারতী অনুরোধ করেন, তিনি কিছু বলতে চান। সম্মতি দেন বিচারক। ভরা এজলাসে ভারতী বলতে শুরু করেন, ‘‘২৩ বছর পুলিশে কাজ করেছি। জঙ্গলমহলেও কাজ করেছি। তখন ভাল ছিলাম। সবং উপনির্বাচনের সময়ে উল্টোপাল্টা আদেশ দেওয়া হল। শুনলাম না। খারাপ হয়ে গেলাম।’’

তাঁকে একের পর এক মামলায় জড়ানো হচ্ছে বলেও এ দিন আদালতে অভিযোগ করেছেন ভারতী। মেদিনীপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী (পিপি) রাজকুমার দাসকে উদ্দেশ্য করে ভারতী বলেন, ‘‘এই কোর্টের পিপি তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমাকে গালাগালি করেছেন। আমি ভিডিয়ো জোগাড় করেছি। সুপ্রিম কোর্টে দেখাবো।’’ আইনজীবী মৃণাল চৌধুরীকে বলে ওঠেন, ‘‘কোর্টে এ সব বলা যায় না।’’ মৃণাল আবার ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের আইনজীবী। মৃণালকে থামিয়ে ভারতী বলেন, ‘‘কোর্ট আমাকে বলার সুযোগ দিয়েছে। একশোবার বলব।’’ পরে সরকারি আইনজীবী রাজকুমারের ব্যাখ্যা, ‘‘আমি কোর্টের মধ্যে পিপি। কোর্টের বাইরে সাধারণ আইনজীবী। যে কোনও রাজনীতি করতে পারি।’’

প্রাক্তন ‘এসপি ম্যাডামে’র বক্তব্যে ততক্ষণে তোলপাড় আদালত চত্বর। এজলাস থেকে বেরনোর পরে অনেকেই ভারতীর সঙ্গে নিজস্বী তুলতে যান। আগের মতো ঝাঁঝিয়ে ওঠেননি, ‘এত ছবির তোলার কী রয়েছে?’ উল্টে বলেছেন, ‘‘হুড়োহুড়ির কিছু নেই। আস্তে আস্তে ছবি তুলুন।’’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও হাসিমুখেই দিয়েছেন ভারতী। আপনিই তো এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলেছিলেন? ভারতীর জবাব, ‘‘কৈকেয়ীও তো মা!’’

এ সবে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, ‘‘হঠাৎ উদয় হয়ে পাগলের প্রলাপ বকছেন। উনি জেলায় থেকে কী করেছেন তা জেলার মানুষ ভালই জানেন।’’

Bharati ghosh BJP TMC ভারতী ঘোষ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy