দলীয় পদে মনোনয়ন জমা দেবেন। তার আগে দলকে জানাতে হবে, তাঁর নামে ক’টা মামলা আছে। বিশেষত, দুর্নীতির অভিযোগে মামলা আছে কি না। থাকলে পত্রপাঠ বাদ। সূত্রের খবর, দলীয় পদ দেওয়ার আগে রাজ্য বিজেপি এ বার এমনই কড়া অবস্থান নিচ্ছে।
বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দলীয় সংগঠন সাজানোর পালা চলছে রাজ্য বিজেপিতে। এখনও রাজ্যের সভাপতি কে হবেন, সেই বিষয়টি স্পষ্ট না হলেও নিচু স্তরের নির্বাচনের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তৃণমূল স্তরে সংগঠনের ক্ষেত্রে বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোয় মণ্ডল স্তরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু সেই মণ্ডল স্তরের সাংগঠনিক নির্বাচন করতে গিয়েই সব চেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে বিজেপিকে। মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে দিকে দিকে বিক্ষোভও হয়েছে আগে। তাই এ বার আরও কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি।
বিজেপির সাংগঠনিক নিয়মে পরবর্তী স্তরের নির্বাচনের জন্য তার ঠিক আগের স্তরের ৫০% নির্বাচন প্রয়োজন। সেই হিসেবে করে বুথ, মণ্ডল ও জেলা কমিটির নির্বাচন হয়েছে। সূত্রের খবর, এ বার যে জেলাগুলিতে সভাপতি নির্বাচনের কাজ হয়ে গিয়েছে, সেই জেলায় বকেয়া মণ্ডল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। সম্প্রতি বিধাননগরের দলীয় দফতরে রাজ্য বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়ের উপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদকেরা বিভাগ ধরে ধরে ‘মণ্ডল রিটার্নিং অফিসার’দের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন।
সূত্রের খবর, বৈঠকে ‘এমআরও’দের কাছ থেকে প্রাপ্ত নামের তালিকা বেশ কয়েকটি মাপকাঠিতে ফেলে ঝাড়াই-বাছাই করা হয়েছে। মণ্ডল সভাপতিদের বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর। তাঁকে দলের সক্রিয় সদস্য হতে হবে। অর্থাৎ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সময়ে তাঁকে অন্তত ১০০ জনকে প্রাথমিক সদস্য করে থাকতে হবে। এ ছাড়া, আরও দু’টি বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই অভিযোগ সামনে এসেছে যে, অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েই পদ পেয়ে গিয়েছেন কেউ কেউ। সেই প্রশ্নে জেলায় জেলায় বিক্ষোভও হয়েছে। তাই ঠিক করা হয়েছে, যিনি মণ্ডল সভাপতি হবেন, তাঁর অন্তত একটি দলীয় পদ সামলানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া, তার নামে দুর্নীতি বা ওই ধরনের মামলা থাকলে চলবে না।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, “আমাদের সকলের নামে রাজনৈতিক কারণে বহু মিথ্যা মামলা রয়েছে। এই সময়ে বিজেপি করতে গেলে মামলা মাথায় নিয়েই করতে হবে। কিন্তু আমরা সেই সঙ্গে এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির উপরে জোর দিচ্ছি। তাই দুর্নীতি অথবা রাজনীতির সঙ্গে যোগ নেই, এমন কোনও মামলার সঙ্গে যুক্ত নন, এমন ব্যক্তিকেই দলীয় পদে বসানো হচ্ছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)