ফাটল বোমা। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে গণনা পর্যন্ত টানা সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বোর্ড গঠনের পর্বে এসে তার পাল্টা দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
শনিবার নদিয়ার চাপড়া ব্লকের বাগবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়াকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি ও পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর করল দুষ্কৃতীরা। ভাঙা হল পুলিশের গাড়ির কাচ। দুই তৃণমূল সদস্যকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল। যার জেরে শেষমেশ স্থগিতই হয়ে গিয়েছে বোর্ড গঠন। যদিও বিজেপির দাবি, তারা এর সঙ্গে যুক্ত নয়, বরং গ্রামবাসীই তৃণমূলের অত্যাচারের জবাব দিয়েছেন।
চাপড়ার ভীমপুর থানা এলাকার ওই পঞ্চায়েতে ১৩টি আসনের মধ্যে তৃণমুল আটটি ও বিজেপি পাঁচটি আসন পেয়েছে। এ দিন বোর্ড গঠনের জন্য জয়ী সদস্যেরা আসতে শুরু করতেই দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির আনা দুষ্কৃতীদের হামলায় তাদের সদস্যেরা এলাকা ছেড়ে পালান। দুই সদস্যকে পঞ্চায়েত অফিসে আটকে রাখা হয়।
চাপড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি জেবের শেখের দাবি, “সংখ্যাগরিষ্ঠতা আমদেরই রয়েছে। বোর্ড পাবে না বুঝে বিজেপি হামলা করে আমাদের সদস্যদের আটকে পঞ্চায়েত দখলের চেষ্টা চালায়।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুতীর্থ চক্রবর্তী পাল্টা দাবি করেন, “ভোটের আগে এবং পরে আমরাই আক্রান্ত হয়েছি। প্রশাসন নীরব দর্শক হয়ে থেকেছে। এই সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মানুষই রুখে দাঁড়িয়েছেন। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগ নেই।”
বস্তুত, নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন থেকেই বাগবেড়িয়া এলাকায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। বিজেপি প্রার্থী ও কর্মীদের মারধর করে গণনা কেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পর তাদের পাওয়া ব্যালটে ছাপ মেরে ভোট নষ্ট করে দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীদের জেতানো হয়েছে বলে অভিযোগ আনে বিজেপি। ওই রাতে বাগবেড়িয়া ও তার পাশে ট্যাংরা গ্রামে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী-নেতাদের বাড়িতে হামলা হয়। তৃণমূল জয়ী সদস্যেরা গ্রামছাড়া হন। বিজেপিই ওই হামলা চালিয়েছে বলে তৃণমূল অভিযোগ আনে। এর পরে ভীমপুর থানার তৎকালীন ওসি লাল্টু ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনাটা যে সেখানেই মেটেনি, এ দিন কার্যত সেটাই স্পষ্ট হয়ে গেল।
জেবের শেখের অভিযোগ, “এ দিন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে হামলা চালানো হয়। এখন তো প্রমাণ হয়ে গেল, সন্ত্রাস কারা করছে! সুপ্রিম কোর্টে আইনের বিচারে হেরে গিয়ে ওরা এখন নিজেদের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে।” বিজেপির নদিয়া উত্তর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মহাদেব সরকার পাল্টা বলেন, ‘‘আমরা কিছু করিনি। বোমা-টোমা সব তৃণমূলের লোকেরাই ছুড়েছে।’’
বাগবেড়িয়া পঞ্চায়েতের ভবিতব্য তা হলে কী? নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শেখর সেন রাতে বলেন, ‘‘বাগবেড়িয়া পঞ্চায়েতের ব্যাপারে বিডিও-র কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। তা হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy