Advertisement
E-Paper

শিশু পাচারে জড়াল বিজেপি নেত্রীর নাম

দত্তক দেওয়ার নাম করে বিদেশে শিশু পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির একটি হোমের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে নাম জড়াল বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকা জুহি চৌধুরীরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৬
পুলিশ হেফাজতে চন্দনা চক্রবর্তী (ডান দিকে) ও সোনালি মণ্ডল। ছবি: সন্দীপ পাল

পুলিশ হেফাজতে চন্দনা চক্রবর্তী (ডান দিকে) ও সোনালি মণ্ডল। ছবি: সন্দীপ পাল

দত্তক দেওয়ার নাম করে বিদেশে শিশু পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির একটি হোমের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে নাম জড়াল বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকা জুহি চৌধুরীরও। হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী, আধিকারিক সোনালি মণ্ডল ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। জুহির বিরুদ্ধে সিআইডি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় শিশু পাচারের অভিযোগ করেছে।

জুহির দাবি, ‘‘আমি তো চন্দনা চক্রবর্তীকে চিনতাম না। দিনকয়েক আগে তিনি আমার কাছে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। হাইকোর্টে মামলা করেছেন বলে দাবি করেন। সব শুনে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেছি।’’ কিন্তু তদন্তের পরে সিআইডির দাবি, জুহির সঙ্গে অভিযুক্তরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অভিযুক্তরা। একাধিক শিশুকে দত্তক দেওয়ার জাল নথি তৈরি করলেও হোমের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সময় সেগুলি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি বলে অভিযোগ। সিআইডি জানিয়েছে, বিজেপি নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের সুবাদে অভিযুক্তরা পরীক্ষা থেকে ছাড় পেয়েছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন: প্রাথমিকে নতুন শিক্ষকদের বদলি নিয়ে পার্থের দুই সুরে বিভ্রান্তি

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘এখন দলের বহু নেতা কর্মীকেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এগুলো ব্ল্যাকমেলিং।’’ দল থেকে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘দোষী প্রমাণিত হলে জুহিকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে।’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, সিআইডি ও পুলিশের যৌথ অভিযান হয়েছিল চন্দনাদের হোমে। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘তাতে অনেক তথ্যই মিলছে। সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, দত্তক দেওয়ার জন্য কোনও হোম বা সংস্থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের লাইসেন্স পেতে হয়। চন্দনাদের হোম নর্থবেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার বছর দশেক আগে লাইসেন্স পেয়ে শিশুদের দত্তক দিতে শুরু করে। দত্তক দিতে হলে শিশু কল্যাণ সমিতি থেকে শুরু করে প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সংস্থার ওয়েবসাইটেও শিশুর খুঁটিনাটি তথ্য উল্লেখ্য করতে হয়। নিয়মের তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে শিশুদের দত্তক দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সিআইডির দাবি, জাল নথি তৈরি করে ১৭টি শিশু পাচার করা হয়েছে। সম্প্রতি শিশু কল্যাণ সমিতি অনিয়মের লিখিত অভিযোগ জানায়। তার পরেই তদন্ত শুরু করে প্রশাসন। সিআইডিও নজরদারি শুরু করে। সংস্থার আরও দু’টি হোম রয়েছে জলপাইগুড়িতে। সেখানে কত শিশু রয়েছে তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

চন্দনা ও সোনালিকে এ দিন ১৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের আইনজীবীরা আদালতে চন্দনার গালে ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে দাবি করেন, ধৃতদের শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তাঁর দাবি, চন্দনা আংটি দিয়ে নিজের গালে ক্ষত করেছেন। চন্দনার আংটি খুলে নেওয়ার আবেদন জানান তিনি।

Chandana Chakraborty Child Trafficking Bjp Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy