Advertisement
০১ মে ২০২৪
Suvendu Adhikari & Rahul Gandhi

‘অসংসদীয় নয়, বোকার চলতি রূপ’! রাহুল সম্পর্কে বলা কটু শব্দ নিয়ে কোনও অনুতাপই নেই শুভেন্দুর

সোমবার বিধাননগরে বিজেপির দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, তিনি রাহুলকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অসংসদীয় শব্দও উচ্চারণ করেননি।

রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে কোনও অসংসদীয় শব্দ ব্য়বহার করেননি তিনি। দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।

রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে কোনও অসংসদীয় শব্দ ব্য়বহার করেননি তিনি। দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩৪
Share: Save:

রাহুল গান্ধীকে নিয়ে বলা কু-শব্দের জন্য অনুতপ্ত নন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর রবিবারের ব্যবহার করা শব্দ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে নানা দিকে। কংগ্রেস তো বটেই, বাংলার শাসকদল তৃণমূলও বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। কিন্তু শুভেন্দু নিজে কোনও খারাপ শব্দ ব্যবহার করেছেন বলে মনেই করছেন না।

সোমবার বিধাননগরে বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু দাবি করেন, তিনি রাহুলকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অসংসদীয় শব্দও উচ্চারণ করেননি। শুভেন্দু বলেন, “আমি কি অসংসদীয় শব্দ বলেছি? যাঁরা আমার বিরুদ্ধে আপনাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, কী বলেছেন তারা?” তিনি আরও বলেন, “সম্মানিত নেতা উনি, যিনি নিজেকে জাতীয় নেতা বলেও দাবি করেন। এত দিনের সাংসদ, নিশ্চিয়ই তিনি নেতা। তিনি বলছেন সকালবেলা উঠে আমরা কি করি? স্টোভের ওপর কয়লা দিয়ে চা বানাই। এটা কি বাস্তব সম্মত কথা? না বোকাদের কথা? বোকার মতো কথা বলেছেন বলে বোকাই বলেছি। এর সঙ্গে কোনও অশালীন বা অসংসদীয় শব্দ নেই। বোকাকে পশ্চিমবঙ্গে যে চলতি ভাষায় বলে সেই শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ নেই। কোনও অসংসদীয় বক্তব্য নেই।’’

রবিবার নন্দীগ্রামে সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে রাহুলের যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন শুনেই বিরক্ত হয়ে ওঠেন শুভেন্দু। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘গত চার দিন ধরে প্রশ্ন করে যাচ্ছেন, রাহুল গান্ধী, রাহুল গান্ধী। কে হরিদাস পাল? একটা...।’’ এর পরেও শুভেন্দু যোগ করেন, ‘‘স্টোভের উপর কয়লা দিয়ে সকালবেলা চা তৈরি হয়। স্টোভের উপরে কয়লা দেওয়া হয় আমি তো দেখিওনি, শুনিওনি। যার এই সেন্স, তাকে কাউন্ট কেন করেন? পশ্চিমবাংলায় তো অপ্রাসঙ্গিক পার্টি। এই পার্টির কোনও অস্তিত্ব নেই।’’ বাংলার রাজনীতিতে কটু কথার অন্ত নেই। তবে রবিবার যে শব্দটি শুভেন্দু ব্যবহার করেছেন সেটিকে ‘অশ্লীল’ বলেই ধরা হয় বাংলা ভাষায়। তবে শুভেন্দু নিজের মন্তব্যের জন্য যে একেবারেই অনুতপ্ত নন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকেই। সেখানেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘হীরক রানি বাই বাই’ বলে একটি ভিডিয়ো ও একটি ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন শুভেন্দু। আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই দুটিই বিজেপির হয়ে কাজ করবে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সোমবারও রাহুলকে খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘ওনাকেও নিজের দিকটা ঠিক করতে হবে। উনি অনেক দিনের সাংসদ। অনেক বয়স হয়ে গেল। আমার সমানই প্রায় বয়স, ৫৪ বছর। এয়ারপোর্টে সব্জি বিক্রি হয় না। আটাকে কেজি বলতে হয়। কখনওই ৪০ টাকা লিটার বলা যায় না। নিজেকে ঠিকঠাক করলেই সমালোচনা হবে না।’’

অন্য দিকে, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে এফআইআর দায়ের শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। শুভেন্দুর মন্তব্য সম্পর্কে দলের প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুভেন্দুর পক্ষে রাহুল গান্ধীর রাজনীতি বোঝা সম্ভব নয়। রাহুল জনতার পাশে দাঁড়িয়ে জনতার সমস্যা দেখেন। শুভেন্দু বা তাঁর দলের নেতারা একটা দূরত্ব থেকে সাধারণ মানুষকে দেখেন এবং বিচার করেন। তাই ওঁরা রাহুল গান্ধীর কেমন মূল্যায়নে কী বলল তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। রাহুল গান্ধী যে ভাবে একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন তা বিজেপির নেতারা কোনও দিন ভাবতে পারবেন না।’’ শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারাও। নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দুর ভিডিয়োটি পোস্ট করে তাঁকে আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষ, অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE