Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Tathagata Roy

কে-এস-এ পলাতক, ফোন ধরছেন না ডি, তথাগতের নিশানায় আবার সেই ‘চতুষ্টয়’

টুইটে কারও নাম না লিখে অদ্যাক্ষর ব্যবহার করলেও রাজনৈতিক মহলের কাছে এঁদের পরিচয় গোপন নেই। আগেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তথাগত।

তথাগত রায় এবং দিলীপ ঘোষ।

তথাগত রায় এবং দিলীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ১২:৫৮
Share: Save:

আক্রান্ত কর্মীরা কান্নাকাটি করলেও ছুঁতে পারছেন না এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের। আর্তদের ফোনও ধরছেন না রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমনই অভিযোগ বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের। বুধবার একটি টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘একজন খুব কাছের মানুষ এসে খুব কান্নাকাটি করছিলেন। বলছিলেন, কয়েক হাজার মানুষ, যাঁরা বিজেপি-র হয়ে কাজ করেছেন, তাঁরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের চাপে ঘরছাড়া। বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানার বিনিময়ে তাঁদের বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আমি অসহায়। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কে-এস-এ পালিয়ে গিয়েছেন। ডি ফোন ধরছেন না’।

তথাগত-র টুইট সৌজন্যেই রাজ্য রাজনীতি এখন ‘কে’, ‘এস’, ‘এ’, ‘ডি’ এই নামসংক্ষেপের সঙ্গে পরিচিত। বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা তিন রাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব পালনের শেষে ফের রাজনীতিতে আসা তথাগত আগেই এই নামসংক্ষেপ ব্যবহার করে আক্রমণ করেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন এবং দিলীপ ঘোষকে। টুইটে কারও নাম না লিখে আদ্যক্ষর ব্যবহার করলেও এঁদের পরিচয় গোপন নেই। আগেই সেই পরিচয় পেয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল তথা বিজেপি-র নেতা, কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার তথাগত বলেন, ‘‘রাজ্যের বহু কর্মী আক্রান্ত। অনেকে ঘড়ছাড়া। আমার কাছে অনেকে সাহায্য চাইছেন। কিন্তু আমি কী করব বুঝতে না পেরে অসহায় বোধ করছি।’’ দলের উচ্চ নেতৃত্বকে কি বিষয়টা জানিয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তথাগত বলেন, ‘‘আমি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। এ বার মনে হচ্ছে লিখিত ভাবে বিস্তারিত জানাতে হবে।’’

বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই এই চার নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তথাগত। ওই চার জনকে ‘কেডিএসএ’ বলে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার তথাগত টুইট করেছেন, এঁরাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহদের নাম পাঁকে টেনে এনেছেন এবং এঁদের জন্যই পৃথিবীর বৃহত্তম দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তার আগে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র তারকা-প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পায়েল সরকার, তনুশ্রী চক্রবর্তীদের ‘নগরের নটী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তথাগত। তা নিয়ে রাজ্য নেতারা কখনও মুখ খোলেননি। এ বারেও তাঁরা নীরবই থাকতে চাইছেন। তবে ওই কারণে তাঁকে যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিল্লিতে তলব করেছে, তা-ও নিজেই জানিয়েছিলেন তথাগত। তবে সেই ডাকে এখনও সাড়া দেননি তিনি। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘সদ্য করোনা-মুক্ত হয়েছি। বাংলায় এবং দিল্লিতে লকডাউন পরিস্থিতি মিটলে আমি নিশ্চয়ই যাব।’’

শুধু রাজনীতিতে ফেরাই নয়, বিজেপি সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও হতে চেয়েছিলেন তথাগত। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ওই চার জনের জন্যই সেটা হয়নি। তা ছাড়া দলের অন্দরে দিলীপের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব তথাগত। কিছু দিন আগেই নাম না করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘রাজনৈতিক জ্ঞানহীন, বিশ্লেষণহীন, বাংলার মানুষের ভাবনা সম্পর্কে কোনও ধারণাহীন, ক্লাস এইট পাশ, ফিটার মিস্ত্রির সার্টিফিকেটওয়ালাদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায়?’’ সেই সময় বিজেপি-র অন্দর মহলের বক্তব্য ছিল, নাম না করলেও তথাগতের তিরের অভিমুখ ছিলেন দিলীপই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh Tathagata Roy BJP Leaders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE