ছবি:সংগৃহীত।
শিক্ষা কেন্দ্র আর রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। রাজনীতির খেলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে এ বার শিক্ষকদের বেতনকে বেছে নিল বিজেপি।
দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই সব থেকে কম বেতনের শিক্ষক পাওয়া যায় বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মহেন্দ্র পাণ্ডে। সেই সঙ্গে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার জন্য বঞ্চিত শিক্ষকদের পরামর্শও দিলেন তিনি। রবিবার কলকাতায় দলের এক অনুষ্ঠানে এসে এ ভাবেই শিক্ষকদের বেতন-বঞ্চনার জিগির তুলে রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন বিজেপির মন্ত্রী।
রাজ্যকে আক্রমণের জন্য পাণ্ডে এ দিন বেছে নেন মূলত চুক্তি-শিক্ষক এবং প্যারাটিচার বা পার্শ্বশিক্ষকদের বেতনের বিষয়টিকে। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে কম বেতনের শিক্ষক পাওয়া যায়। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক, প্যারাটিচারদের অনেকে তো মাত্র আট হাজার টাকা পান। বেতনের মধ্যে ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র। বাকিটা রাজ্যে সরকারের দেওয়ার কথা। ‘‘কিন্তু সেটুকুও মোটেই ঠিক করে দেওয়া হয় না। সেটা আদায়ের জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে আপনাদের (শিক্ষকদের) আন্দোলন করতে হবে। এ ভাবে চলতে দেওয়া হবে না,’’ বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক স্তরে পার্শ্বশিক্ষকদের মাসিক বেতন ৫৯৯৬ এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে সেটা ৮১৮৬ টাকা। বেতন-কাঠামো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। কম বেতনের জন্য সম্প্রতি বহু শিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ রাজ্য পার্শ্বশিক্ষক সমিতির। এ দিন সুকৌশলে সেই ক্ষোভের আগুনে প্রতিমন্ত্রী ঘৃতাহুতি দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, বেতনের ৬০ শতাংশ কেন্দ্র দিলেও বেতন-কাঠামো ঠিক করে রাজ্য সরকার। শিক্ষক সমিতির সম্পাদক রোমিউল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘বেতন-কাঠামো ঠিক করার জন্য রাজ্যকে চাপ দেওয়া উচিত কেন্দ্রের। সেই দায়িত্ব কেন্দ্র পালন করছে না।’’
স্কুলশিক্ষা দফতর থেকেই জানা গিয়েছে ক’জন চুক্তি বা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হবে, তার তালিকা তৈরি করে রাজ্য সরকার। তার পরে তাঁদের বেতন ঠিক করে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়। তার ভিত্তিতেই সব শিক্ষকের বেতনের ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র। তাই রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছেন মন্ত্রী। এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানার জন্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।
কম বেতন নিয়ে ক্ষোভের কথা এ দিন মহেন্দ্রকে জানান শিক্ষক সংগঠন কুটাব। সংগঠনের সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার শিক্ষকদের শোষণ করছে, আর সেই ছাড়পত্র দিচ্ছে কেন্দ্র।’’ এর প্রতিবাদে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসে তাঁরা হাজরা থেকে মিছিল করে নজরুল মঞ্চে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানান গৌরাঙ্গবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy