প্রতীকী ছবি।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যখন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক বিক্ষোভ ফেটে পড়ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে কৃষক-সঙ্কট নিয়ে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করছে বিজেপি।
বিজেপির কিষাণ মোর্চার অভিযোগ মূলত তিনটি। এক, অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কেন্দ্রীয় সরকার কিষাণ ক্রেডিট কার্ড চালু করেছিল। কিন্তু এ রাজ্যে এখনও সব কৃষক ওই কার্ড পাননি। দুই, এ রাজ্যের সরকার কেন্দ্রের কৃষক কল্যাণকামী প্রকল্পগুলি প্রচার না করে নিজেরা কৃতিত্ব দাবি করছে। তিন, এ রাজ্যের কৃষকরা কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন না। বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘কৃষকদের সঙ্গে তৃণমূল যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তা আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরব।’’ বিজেপির কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি রামকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের দুর্দশা মানুষকে জানানোর জন্য সভা, মিছিল করতে চাইলে পুলিশ কখনওই আমাদের অনুমতি দেয় না। জোর করে ওই সব কর্মসূচি করলে কর্মীদের হামলার মুখে পড়তে হয়। তাই আমরা ১০ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারপত্র বিলি করব। সেখানেই কৃষক প্রশ্নে কেন্দ্র এবং রাজ্যের ভূমিকা ব্যাখ্যা করব।’’
তৃণমূলের কিষাণ ও খেতমজুর সংগঠনের সভাপতি বেচারাম মান্না অবশ্য বিজেপির ওই সব অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের কৃষকরা মুখ্যমন্ত্রীর বহুমুখী প্রকল্পের সুফল পেয়েছেন। তাই দেখে বিজেপির রাজ্য নেতারা ভিরমি খেয়ে উল্টোপাল্টা বকছেন!’’
কিন্তু ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি)-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশে কৃষক আত্মহত্যা প্রায় ৪২% বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কিষাণ মোর্চার মুখে এই সব অভিযোগ মানুষ কেন শুনবে? রামকৃষ্ণবাবুর জবাব, ‘‘কেন্দ্রে আমাদের সরকার হলেও যাঁরা তথ্যপঞ্জি তৈরি করেন, সেই কর্মী-আধিকারিকরা তো সব বিজেপির লোক হয়ে যাননি! তাই কৃষক আত্মহত্যার ওই রকম সব হিসাব দেওয়া হচ্ছে!’’ কিন্তু কৃষিতে উন্নতির জন্য বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পুরস্কার দিয়েছে। তা হলে কিষাণ মোর্চার অভিযোগ ধোপে টিকবে কী ভাবে? রামকৃষ্ণবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য যে সব রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে তথ্যের কারসাজি করার সুযোগ আছে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এ রাজ্যের কৃষকদের সিংহভাগ সিপিএম এবং তৃণমূলের কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনে আছে। এ রাজ্যে সিপিএমের কৃষকসভা এবং খেতজমুর সংগঠনের সদস্য যথাক্রমে প্রায় ৫৭ লক্ষ এবং ১৭ লক্ষ ৪০ হাজার। আর তৃণমূলের কিষাণ ও খেতমজুর সংগঠনের সদস্য ৮ লক্ষের বেশি। কিন্তু বিজেপির রাজ্য কিষাণ মোর্চার সদস্য সংখ্যা বলতে পারেননি তাঁদের নেতৃত্ব। রামকৃষ্ণবাবু জানান, তাঁদের দলের সদস্য সংখ্যার হিসাব হয়। আলাদা করে মোর্চার সদস্যের হিসাব রাখা হয় না। তবে রাজ্যে ওই মোর্চার ২৩ হাজার পদাধিকারী আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy