সাধারণ নির্বাচনের আগে অশান্ত বাংলাদেশে শান্তি ফিরুক! এমনটাই চায় রাশিয়া। এর পাশাপাশি ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ চায়, নয়াদিল্লির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক করুক বাংলাদেশ।
সোমবার ঢাকায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজ়ান্ডার গ্রিগোরাইভিচ। সেখানেই তিনি রাশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে জানান যে, তাঁরা চান সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে তৈরি হওয়া অস্থিরতার অবসান হোক এবং নির্বাচনের সহায়ক একটি গঠনমূলক পরিবেশ তৈরি হোক। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে সে দেশের নির্বাচন কমিশন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা বাংলাদেশে।
রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং আস্থা জরুরি। তিনি এ-ও জানান যে, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে চায় না মস্কো। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে পুতিনের দূতের বার্তা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আগেই সমাধানের পথ খোঁজা ভাল।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের নির্বাচন দেখার জন্য বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আমন্ত্রণ পেয়েছে রাশিয়াও। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, তাঁরা আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছেন। আমন্ত্রণ পেলেই রাশিয়ার নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা বাংলাদেশে যাবেন। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানান রুশ রাষ্ট্রদূত।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার সম্পর্কের পতনের পর নয়াদিল্লি এবং ঢাকার সম্পর্ক আগের মতো মসৃণ নেই। বাংলাদেশ নতুন করে উত্তপ্ত হওয়ার তিন দিন পরে রবিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নিবিড় ভাবে নজর রেখেছে ভারত। সে দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আধিকারিকেরা যোগাযোগ রাখছেন। সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন— তা তাঁদের জানানো হয়েছে। দীপুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ভারত সেই আবেদন জানিয়েছে।’’
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের ওই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। ময়মনসিংহের ঘটনার প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির বিবৃতি নিয়ে আপত্তি জানায় ঢাকা। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করে, ময়মনসিংহের ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ভারতের কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বলে দেখাচ্ছেন বলে দাবি করে তারা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে একজন নাগরিকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে সংখ্যালঘু নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক এ-ও দাবি করে যে, ময়মনসিংহের ঘটনায় তারা দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করেছে।