Advertisement
১১ মে ২০২৪
Sisir Adhikari

শান্তিকুঞ্জে সুকান্ত, কোজাগরী সন্ধ্যায় শিশিরের সঙ্গে কথা, পাশে দুই পুত্র শুভেন্দু ও সৌমেন্দু, কটাক্ষ তৃণমূলের

সুকান্তর কনভয় শান্তিকুঞ্জর কাছে পৌঁছাতেই বাড়ির সদর দরজায় ফুলের তোড়া হাতে বেরিয়ে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর ঠিক পিছনেই ছিলেন কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারী।

রবিবার কোজাগরী লক্ষ্ণী পুজোর সন্ধ্যায় শান্তিকুঞ্জে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে তাঁর পিতা শিশির অধিকারীর সঙ্গে দেখা করলেন সুকান্ত মজুমদার।

রবিবার কোজাগরী লক্ষ্ণী পুজোর সন্ধ্যায় শান্তিকুঞ্জে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে তাঁর পিতা শিশির অধিকারীর সঙ্গে দেখা করলেন সুকান্ত মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৫৬
Share: Save:

বিজেপি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে গেলেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তাও আবার কোজাগরী লক্ষ্ণীপুজোর দিন সন্ধ্যায়। সুকান্তের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয় শান্তিকুঞ্জের কর্তা শিশির অধিকারীর। যদিও সেই কথায় কোনও রাজনীতি ছিল না বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে এই সাক্ষাৎ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।

কাঁথির শান্তিকুঞ্জে লক্ষ্মীপুজো হয় ধুমধাম করেই। অধিকারী পরিবারের তরফেই বালুরঘাটের সাংসদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সন্ধ্যায় কাঁথি পৌঁছান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর গাড়ি শান্তিকুঞ্জর কাছে পৌঁছাতেই বাড়ির সদর দরজায় ফুলের তোড়া হাতে বেরিয়ে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। সুকান্তকে জড়িয়েও ধরেন শুভেন্দু। পিছনেই ছিলেন শুভেন্দুর ছোট ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী।শুক্রবার সৌমেন্দুকে কাঁথি থানার পুলিশ টানা দশ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জেরা করেছিল। তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর চলছে। সেই আবহে রাজ্য বিজেপি যে সৌমেন্দু তথা অধিকারী পরিবারের পাশেই রয়েছে, সেই বার্তা দিতেই সুকান্তের কাঁথিতে আসা বলে মনে করছেন অনেকে।

কাঁথির সাংসদ শিশিরের সঙ্গে বিজয়ার সৌজন্য বিনময়ের পরে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন সুকান্ত। জানা গিয়েছে, সেই সময় ওই ঘরেই ছিলেন শুভেন্দু ও দিব্যেন্দু। ছিলেন অধিকারীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও।শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমি এখানে বিজয়ার প্রণাম করতে এসেছিলাম। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন হলে আমরা বয়োজ্যেষ্ঠদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করি। এটাই আমাদের রীতি। পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিতে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ যে ক’জন রাজনীতিক বেঁচে আছেন, তাঁদের একজন শিশিরবাবু। তাই তাঁর মতো মানুষকে সম্মান জানাতে এসেছিলাম।’’ আপনি কী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও বিজয়া করতে যাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘আমি আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও এই শুভেচ্ছা জানাতে যেতে পারতাম। কিন্তু তাঁর হাতে আমাদের কর্মীদের রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। তাই আমি যাব না।’’

শান্তিকুঞ্জে শিশির-সুকান্ত কথা নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অধিকারী পরিবার যে দলবদলু তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। শিশিরবাবু এখনও তৃণমূলের নির্বাচিত সাংসদ। অথচ বৈঠক করছেন বিজেপি সভাপতির সঙ্গে। সুকান্তবাবুরা যেন মনে রাখেন শিশিরবাবু একবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন, তাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায়। আর শুভেন্দু, দিব্যেন্দু, সৌমেন্দুও রাজনীতিতে যা পেয়েছেন বা করেছেন, তাও মমতাদির জন্যই।’’

প্রসঙ্গত, শিশির এখনও তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত সাংসদ। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এগরায় বিজেপির জনসভায় অমিত শাহের সঙ্গে এক মঞ্চে হাজির থাকার কারণে শিশিরের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল।

সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের সিংহভাগ সাংসদরা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ভোট দিলেও, শিশির তাঁর আরও এক সাংসদপুত্রকে নিয়ে দিল্লি গিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। আর উপরাষ্ট্রপতি ভোটে তৃণমূলের ভোটদানের বিরত থাকার সিদ্ধান্তকে না মেনে সংসদে গিয়ে ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা। পাল্টা দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় দুই সাংসদকে কড়া চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১২ অক্টোবর শিশিরের সাংসদপদ খারিজ নিয়ে শুনানি রয়েছে স্পিকারের কাছে। তার আগেই বিজেপি সভাপতির শান্তিকুঞ্জে আসাকে তাঁদের অভিযোগকে জোরালো করবে বলেই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।এর আগে দু’টি শুনানিতে শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজির হতে পারেননি শিশির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE