কার্নিভাল-বিতর্কে স্বস্তিকা
নিয়মিত কট্টর সমালোচনা না করলেও, কলকাতার শিল্পীমহলে বর্তমান শাসকদলের ছোঁয়া বাঁচিয়েই চলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে পুজো কার্নিভালের শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখে অনেকেই বিদ্রুপের তির ছুড়তে শুরু করেছেন। তালিকায় রয়েছেন ঘোষিত বামপন্থী অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। শনিবার রাত থেকে ‘খোঁচা’ খেতে খেতে রবিবার সকালে মৌনীভঙ্গ করছেন স্বস্তিকা।
রেড রোডের পুজো কার্নিভালে টলি-তারকাদের জৌলুস ছিল চোখে পড়ার মতোই। আরও বেশি চোখে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে অচেনা মুখ, চেনা অভিনেত্রী স্বস্তিকা। বহু বছর পর দেখা। ‘কেমন আছ দিদি’ বলে কাছে যেতেই তাঁর হাত চেপে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। কথাবার্তা হল। মমতার পা ছুঁয়ে প্রণামও করলেন অভিনেত্রী। তার পরই শোরগোল। নেটমাধ্যমে মমতা-স্বস্তিকার ছবির নীচে ‘ঝাঁপিয়ে’ পড়লেন নিন্দকরা। প্রশ্নবাণ, কটাক্ষবাণ বইতে শুরু করল। স্বস্তিকা কি তবে ঘাসফুলে ভিড়ছেন? হাতে কাজ নেই বলে হাত করতে চাইছেন মমতাকে? কেউ লিখলেন, “টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রির ৯০% শিল্পী মেরুদণ্ডহীন এটা প্রমাণিত বহু দিন আগেই। নতুন কিছু না। এ সব না করলে কাজ পাবে না।”
কটাক্ষের বন্যার মাঝে শেষমেশ মুখ খুললেন স্বস্তিকা। বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে উত্তর দিলেন, “আমি মানুষের পাশে যে ভাবে থাকার ঠিকই থাকি। সবটা তো আর ফেসবুকে পোস্ট হয় না, তাই জানতে পারেন না। আর জানানোর প্রয়োজনও বোধ করি না।’’ কেন গিয়েছিলেন তা-ও জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘...এত বড় একটা উদ্যাপন, সেখানে হাজার হাজার মানুষ গিয়েছেন, আমার যাওয়াটা ভুল? মানতে পারলাম না। আমাদের রাজ্যের অগুনতি মানুষ ওখানে গেছেন ঠাকুর দেখতে, আমিও একই কারণে গেছি। সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি জড়ানোর দরকার নেই। এর মানে বিকিয়ে যাওয়া নয়!”
স্বস্তিকা যাই বলুন, খোঁচা থামেনি। মন্তব্য জুড়েছেন শ্রীলেখাও। স্বস্তিকার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি শেয়ার করে লিখলেন, “আমার ‘খামতি’ দিদিমণি। আপনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন আমার খামতিটা কোথায়। আপনাদের মতো হতে পারলাম না এটাই তো? যখন চাইবেন পায়ের তলার মাটি ঠিক পেয়ে যাবেন। কারেক্ট আছে।”
এর আগেও অভিনেত্রী ইন্ডাস্ট্রির স্বজনপোষণের সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছেন। বলেছিলেন, “কাজ পাব না তা-ও ভাল। অমুকের ছাতার তলায় গিয়ে জাত খোয়াতে পারব না। আত্মসম্মানে লাগে। যারা পারেন, তাঁরাই বরং আখের গোছান। আমি আমার নিজের ছবির কাজ আর সারমেয়দের নিয়ে বেশ আছি।”
স্বস্তিকা অবশ্য ‘আখের গোছানো’ বা ‘জাত খোয়ানো’র মতো ব্যঙ্গোক্তিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। লিখেছেন, ‘‘শুভ বিজয়া বলে নমস্কার করে চলে এসেছি। সিএম (মুখ্যমন্ত্রী) বলে কথা, কত বছর পর দেখা হল। নমস্কারটুকু তো করব? সেটার মানে কি বিকিয়ে যাওয়া?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy