E-Paper

বিপ্লবের ‘দানব’, কল্যাণের ‘অসুর’, তরজায় দু’পক্ষ

ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দিন খুন-ধর্ষণ হচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ করেন না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দানবের মতো স্বভাব হয়ে গিয়েছে! তাঁর কোনও অনুভুতি নেই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৪৪
(বাঁ দিকে) বিপ্লব দেব এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) বিপ্লব দেব এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বাংলায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে উৎসবের মরসুমে এ বার ‘দানব-অসুরে’র তরজায় জড়িয়ে পড়লেন কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলের নেতারা! ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বঙ্গে বিজেপির নির্বাচনী সহ-পর্যবেক্ষক বিপ্লব দেবের দাবি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ‘দানবের মতো স্বভাব’ হয়ে গিয়েছে। বাংলাকে ‘দানবমুক্ত’ করার ডাক দিয়েছেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার মা কালীর কাছে ২০২৬-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে ‘অসুর দমন’ করতে পারেন, সেই আশীর্বাদ চাইতে গিয়ে বলে বসেছেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে ‘অসুর’ হিসেবে মানায় ভাল! দু’পক্ষই পরস্পরের মন্তব্যের জবাবও দিয়েছে।

আগরতলায় মঙ্গলবার ইন্দ্রনগর কালীবাড়িতে পুজো দেওয়ার পরে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দিন খুন-ধর্ষণ হচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ করেন না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দানবের মতো স্বভাব হয়ে গিয়েছে! তাঁর কোনও অনুভুতি নেই।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘কোনও ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মনে দাগ কাটে না। এতে মনে হচ্ছে, অস্ত্রোপচার করে মুখ্যমন্ত্রীর হৃদয় বার করে নেওয়া হয়েছে!’’ এখানেই থামেননি বিজেপি সাংসদ বিপ্লব। আরও বলেছেন, ‘‘মহিলারা ‘মমতাময়ী’ হন। কিন্তু তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) এই নামটাকে বদনাম করে দিয়েছেন। কেউ যেমন মীর জ়াফর নাম আর রাখতে চায় না, একই কারণে কেউ এখন ‘মমতা’ নামও রাখতে চায় না!’’ বিপ্লবের দাবি, বাংলার মানুষ ‘অরাজকতা ও দুর্নীতি’ থেকে মুক্তি চাইছেন।

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘বাংলার এক জন মহিলা সম্পর্কে এই মন্তব্য অসম্মানজনক। বাংলার মানুষের প্রতি বাংলার নিজের মেয়ের মমতা কতটা, সেটা সাধারণ মানুষ জানেন। আর বিপ্লবের এতই ওঁর রাজ্যের মানুষের প্রতি মমতা রয়েছে যে, ওঁকে পূর্ণ সময়ের আগেই ওঁর দল মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে!’’

বাঁকুড়ার দোলতলার বাড়িতে কালী আরাধনা করতে গিয়ে প্রতিমার সামনে ফের আবেগে কেঁদেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। পরে বলেছেন, ‘‘মায়ের কাছে বেশি কিছু চাওয়া যায় না। বিশ্বের ও বাংলার শান্তি চাইলাম। আর চাইলাম, মমতাদি’কে মা আশীর্বাদ করুক, তিনি যেন ছাব্বিশের ভোটে অসুর দমন করতে পারেন। অনেকগুলো অসুর ঘুরে বেড়াচ্ছে, অসুরগুলো নিধন হোক!’’ এই সূত্রেই তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘শ্রীরামপুরে আমরা নানা রকমের অসুর তৈরি করি। সুকান্ত মজুমদারের মুখটা খুব ভাল অসুরের মতো! সুকান্তকে অসুর-অসুর দেখতে, ওর মতো অসুর বেশি হবে! বিজেপির আরও দু-একটা নেতা আছে। তবু সুকান্ত অসুরের জন্য একেবারে মানানসই!’’

কিছু দিন ধরেই সুকান্ত বনাম কল্যাণের তরজা চরমে উঠেছে। এই মন্তব্যের পরে সুকান্ত বলেছেন, ‘‘কল্যাণ ওঁর শিক্ষার পরিচয় দিচ্ছেন এক এক করে! কখন কী অবস্থায় বলেছেন, দেখতে হবে!’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘সব মন্তব্যের জবাব হয় না, বিশেষত বক্তা যখন কল্যাণ। ওঁর শরীরী ভাষা, শব্দচয়ন গোটা দেশের মানুষ জেনে গিয়েছেন। তবে এটুকু বলতে পারি, সামনের বছর দুর্গা পুজো করার বা কমিটিতে থাকার সুযোগ ওঁর থাকবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy