এসআইআরের কাজে নির্দিষ্ট ঠিকানায় এনুমারেশন ফর্ম দিতে গিয়ে অনেক ভোটারকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অভিযোগ করছেন অনেক বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)। তাঁদের অভিযোগ, তিন বার করে সেই ঠিকানায় গিয়েও ওই ভোটারদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ দিকে এনুমারেশন ফর্মের ডিজিটাইজ়েশনের কাজ শেষ করার সময়সীমা এগিয়ে আসছে। তাই কিছু ভোটারদের খুঁজে না পেয়ে বুথে বুথে নোটিস দিতে শুরু করলেন বিএলও-রা। হুগলির চাঁপদানি বিধানসভার ১১১ এবং ১১২ নম্বর বুথে কয়েক জন ভোটারকে খুঁজে না পেয়ে ‘পাবলিক নোটিস’ টাঙিয়ে দিলেন বিএলও। স্থানীয়দের বক্তব্য, তাঁরা ‘বৈধ’ ভোটার হলে, এলাকায় না থাকলেও তাঁদের কোনও পরিজন নিশ্চয়ই বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
বিএলও-দের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁপদানি বিধানসভার ১১১ নম্বর বুথের ২৫ জন এবং ১১২ নম্বর বুথের ৩০ জন ভোটারকে চিহ্নিত করা যায়নি। অভিযোগ, নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়েও তাঁদের পাওয়া যায়নি। তার পরেই পাবলিক নোটিস সাঁটিয়ে দিলেন বিএলও। আরও অভিযোগ, বৈদ্যবাটি পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি বুথে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করতে গিয়ে বেশ কিছু ভোটারের খোঁজ মেলেনি। তিন বার ওই এলাকায় গিয়েও তাঁদের না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় নোটিস টাঙিয়ে দেন।
নির্বাচন কমিশনের সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও ভোটারকে খুঁজে না পেলে সেই এলাকায় পাবলিক নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়ার কথা বিএলও-র। সেই মতোই চাঁপদানিতে কাজ করেছেন তাঁরা। অভিযোগ, ওই বুথগুলির বিএলও-দের সঙ্গে যে বিএলএ-রা ছিলেন, তাঁরাও খুঁজে বার করতে পারেননি ভোটারদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ‘বৈধ’ ভোটার হলে এলাকায় থাকবেন। নয়তো তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কারও না কারও থাকার কথা। এক্ষেত্রে কাউকে পাওয়া যায়নি। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটারদের তথ্য ডিজিটাইজ়েশনের কাজ শেষ করার জন্য বিএলও-দের সময়সীমা দিয়েছিল কমিশন। সেই সময়সীমা আরও সাত দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বার সেই কাজই শেষ করছেন বিএলও-রা। যে ভোটারদের হদিস পাননি, তাঁদের নামে নোটিস টাঙিয়ে দিচ্ছেন বুথে বুথে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন কমিশন বলছে, এসআইআরে শনিবার পর্যন্ত ৩৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৮০০ জন ভোটারের নাম বাদ পড়ার হিসাব মিলেছে। তাঁদের মধ্যে মৃত ভোটারের সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৭০ হাজার। কমিশন সূত্রে খবর, শনিবার পর্যন্ত যে ভোটারদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের মধ্যে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার জন ভোটারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যাঁদের নাম বাদ পড়ার হিসাব মিলেছে, তাঁদের মধ্যে ১১ লক্ষ ৮২ হাজার জন স্থানান্তরিত হয়েছেন। ঠিকানা পরিবর্তনের কারণে অনেকের বাড়িতে বার বার গেলেও তাঁদের হদিস পাননি বুথ স্তরের আধিকারিকেরা (বিএলও)। খসড়া তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়ার হিসাব মিলেছে, তাঁদের মধ্যে ৭৭ হাজার ৫৬০ জন ‘ভুয়ো’। অভিযোগ, একাধিক জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে তাঁদের। ওই ‘নকল’ ভোটারদের চিহ্নিত করে খসড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে তাঁদের নাম।