ফের পুলিশি অভিযান। ফের অবরুদ্ধ হল ভাঙড়।
শনিবার দুপুরে তৃণমূলের একটি মিছিল থেকে বোমা ও ইট ছোড়ার অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ভাঙড়ের পোলেরহাট, পদ্মপুকুর-সহ কয়েকটি এলাকায়। অবরোধে নেমেছিলেন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতে গ্রিড সংলগ্ন এলাকায় রুটমার্চ করে পুলিশ। কিন্তু এর পরে এক তৃণমূল নেতাকে মারধরের অভিযোগে রবিবার সকালে পুলিশ উত্তর গাজিপুরের আহাদ আলি মোল্লা নামে এক আন্দোলনকারীকে গ্রেফতারের পরেই ফের অবরোধ শুরু হয়। আন্দোলনে সামিল হন মহিলারাও। গ্রিড সংলগ্ন টোনা, বকডোবা, মাছিভাঙা, খামারআইটের মতো গ্রামগুলির রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলা হয়। ধৃতের মুক্তি দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। রাত পর্যন্ত অবরোধ চলতে থাকে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বোমাবাজি করা সত্ত্বেও তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার না করে পুলিশ শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছেন, এমন এক জনকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। এর প্রতিবাদেই অবরোধ করা হয়। পুলিশ শাসক দলের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছে।
গত ১৭ জানুয়ারি ভাঙড়-কাণ্ডের পরে লাগাতার অবরোধে নামেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশকে ঢুকতে না দিয়ে কার্যত ‘মুক্তাঞ্চল’ গড়ে তোলা হয়েছিল। পরে অবশ্য মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য অবরোধ তোলার কথা জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। উচ্চমাধ্যমিক এখনও শুরু হয়নি। তার আগে ফের অবরোধ প্রসঙ্গে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘আমরা তো অবরোধ তুলেই নিয়েছিলাম। শনিবার পুলিশ যা করল, তাতে এ ছাড়া উপায় ছিল না।’’
পুলিশ অবশ্য ধৃতকে ছাড়েনি। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘আন্দোলনের জন্য নয়, শনিবার এক তৃণমূল নেতাকে মারধরের অভিযোগে আহাদ আলিকে ধরা হয়।’’ জেলা তৃণমূলের এক নেতার দাবি, ‘‘পুলিশ আইনমাফিক কাজ করছে। পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘‘ভাঙড়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় যোগাযোগ রাখছেন। ওখানে এমনিতে অসুবিধা নেই। বাইরে থেকে
লোক এসে উস্কানি দিয়েছে।’’ তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, গত বুধবার দলীয় বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা এবং আরাবুল ইসলামের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই ভাঙড়ে বহিরাগতরা অশান্তি করতে পেরেছে। তার জন্য রেজ্জাককে ভর্ৎসনাও করেছিলেন মমতা।
এ বারের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে রাতেই কাশীপুর থানায় বৈঠক করেন জেলা পুলিশের কর্তারা। পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন এলাকায় দফায় দফায় রুটমার্চ করে পুলিশ।