Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Bratya Basu

চিঠি ‘রহস্য’! সুজনের স্ত্রীর যোগদানপত্র ‘ভাইরাল’, ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যা বললেন ব্রাত্য

তৃণমূলের প্রকাশ করা ওই চিঠি নিয়ে একটা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কেউ কেউ বলেন, যোগদানপত্র ১৯৮৭ সালের। আর প্রিন্সিপাল সেটি ‘অথেন্টিকেট’ করছেন ২০২০ সালে!

image of sujan chakraborty and bratya basu

চিঠির প্রেক্ষিতেই ব্রাত্য জানিয়ে দিলেন, বাম আমলে বহু যোগ্য প্রার্থীকে ‘বঞ্চিত’ করে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। — ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৬:১৮
Share: Save:

বামনেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরিতে যোগ দেওয়ার একটি চিঠি টুইট করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। বৃহস্পতিবারের সেই টুইট নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শুক্রবার সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ওই চিঠির প্রেক্ষিতেই তিনি জানিয়ে দিলেন, বাম আমলে বহু যোগ্য প্রার্থীকে ‘বঞ্চিত’ করে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, গোটা বিষয়টির মধ্যে যে ‘অস্বচ্ছতা’ ছিল, সে দাবিও করেছেন ব্রাত্য।

বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তরফে একটি একটি টুইট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী কোনও নিয়োগ পরীক্ষায় পাশ করেননি। কিন্তু ৩৪ বছর ধরে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রিউস কলেজে কাজ করেছেন। ৫৫ হাজার বেসিক বেতন নিয়ে ২০২১ সালে অবসর নিয়েছেন। এখন পেনশন পাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের ক্ষমতার অপব্যবহারের গল্প কখনও শেষ হবে না।’’ এ নিয়ে সরব হন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। যদিও সুজন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘পদ্ধতি মেনে পরীক্ষা দিয়েই আমার স্ত্রী চাকরি পেয়েছিলেন। তৃণমূল যে চিঠি দেখাচ্ছে, সেটা জয়েনিং লেটার। ১৯৮৭ সালের। মিলি (সুজনের স্ত্রী) যে পদে চাকরি পেয়েছিলেন, সেই পদেই অবসর নিয়েছেন। বামফ্রন্ট আমলে যে কোনও দুর্নীতি হয়নি, এটাই তার প্রমাণ।’’

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছে সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি। সম্প্রতি আতশকাচের নীচে সুজনের স্ত্রীর চাকরি। কুণাল তাঁর চাকরি পাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু তৃণমূলের প্রকাশ করা ওই চিঠি নিয়ে একটা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কেউ কেউ বলেন, যোগদানপত্র ১৯৮৭ সালের। আর প্রিন্সিপাল সেটি ‘অথেন্টিকেট’ করছেন ২০২০ সালে! সমাজমাধ্যমে কেউ আবার লেখেন, মিথ্যা বলতে গেলেও ইতিহাস জানতে হয়। আগে ক্যালকাটা লেখা হত। কিন্তু ২০০১ সালের পর কলকাতা লেখা হয়। এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, ‘‘৮৭ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। ২০২০ সালে এসে অথেনটিকেট করা হচ্ছে। তার মানে পুরো ব্যবস্থার মধ্যে অস্বচ্ছতা রয়েছে। বহু যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এত বছরের মাইনে ফেরত দেবেন কি না, সেটা নিয়ে আমরা আদালতের দিকে তাকাব।’’

আদালতের রায়ে শিক্ষকের চাকরি হারিয়েছেন বহু জন। আদালতের নির্দেশেই চাকরি গিয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর। যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি করে পাওয়া বেতনের টাকা দুই কিস্তিতে ফেরাতেও হয়েছে তাঁকে। ব্রাত্য এ বার সুজনের স্ত্রীর চাকরি করে পাওয়া টাকাও ফেরানোর প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৯ সালে তৈরি হয়েছিল কলেজ সার্ভিস কমিশন। তখনও গ্রুপ সি এবং ডিকে ওরা কলেজ সার্ভিস কমিশনের আওতায় আনেনি। নথি থেকে তাই পরিষ্কার নয় যে, ওঁর (সুজনের স্ত্রী) ক্ষেত্রে পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ হয়েছিল কি না।’’

সুজনের স্ত্রীর চাকরি নিয়ে তদন্ত হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্রাত্য। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্ত করতে হবে কি না, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করব। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যদি বলেন, আমার কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছ কেন, তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’’ গত ১২-১৩ বছর ধরে কেন এই নিয়ে মুখ খোলেনি বর্তমান সরকার, সেই কারণও জানিয়েছেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘উনি অবসর নিয়েছেন ২০২১ সালে। এই সরকারের বেতন নিয়েছেন এবং এখন পেনশন নিচ্ছেন। ১২-১৩ বছর ধরে এ নিয়ে আমরা কোনও কথা বলিনি। কারণ আমরা বদলা নয়, বদল চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE