সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফের সঙ্গে সন্দেহভাজন গরুপাচারকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে দাবি। —নিজস্ব চিত্র।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরুপাচারের সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হলেন তিন সন্দেহভাজন পাচারকারী। শুক্রবার ভোরে কোচবিহার জেলার সিতাইয়ে নিহত তিন জনের মধ্যে এক জন ভারতীয় বলে দাবি। শুক্রবার এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত বাকি দু’জনের নাম এবং পরিচয় জানা যায়নি। তবে তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করেছেন স্থানীয়েরা। যদিও গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিএসএফের তরফে কিছু জানানো হয়নি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সিতাই থানার পুলিশ।
এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত ঘটনা নিয়ে জেলা পুলিশের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফের সঙ্গে সন্দেহভাজন গরুপাচারকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। রাতে ওই তিন জন গরুপাচার করছিলেন বলে অভিযোগ। সে সময় পাচারে বাধা দেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা। তাঁদেরকে পাল্টা আক্রমণ করেন অভিযুক্তরা। বিএসএফের জওয়ানদের লক্ষ্য করে ইঠপাটকেল ছুড়তে থাকেন ওই ব্যক্তিরা। অভিযোগ, সে সময় পাচারকারীদের দিকে গুলি ছোড়েন বিএসএফ জওয়ানেরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন তিন জন। নিহতদের মধ্যে প্রকাশ বর্মণ নামে এক জন ভারতীয় এবং বাকিরা বাংলাদেশের বাসিন্দা ছিলেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার সকালে কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে যে বিএসএফের গুলিতে তিন জন মারা গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে সিতাই থানার পুলিশ পৌঁছেছে। তবে এ নিয়ে বিএসএফের তরফে জানানো হলে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে বলতে পারব।’’
শুক্রবার দুপুরের দিকে অবশ্য ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দেন কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ সিতাই থানার অন্তর্গত এলাকায় কয়েক জনকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পার করতে দেখেন বিএসএফের জওয়ানেরা। চ্যালেঞ্জ জানানো হলে প্রায় ৫০ জন পাচারকারী ঘিরে ধরে তাঁদের। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দু’জন পাচারকারী মারা যান। তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাংলাদেশ বর্ডারের ও পারে তাঁদের দেহ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের বাংলাদেশী বলে মনে করা হচ্ছে। অন্য একটি দেহ দেশের এ পার থেকে উদ্ধার হয়েছে। নিহতের নাম প্রকাশ বর্মণ (৩৫)।’’ ঘটনাস্থল থেকে দু’টো করে শিকল এবং হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার পিছনে বিএসএফের ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শুক্রবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ গুলি কেন করেছে, তা তারাই জানে। তল্লাশির জন্য বিএসএফ নিজের এলাকা বাড়াতে চাইছে। বিএসএফকে এই এলাকার মানুষ ভরসা করে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy