Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেট্রো আসছে নানা রুটে, বাসরুটের পুনর্বিন্যাস নিয়ে কথা

গড়িয়া মোড় থেকে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পরে ভিড় কমে গিয়েছে ওই রুটের বাস এবং অটোরিকশায়। আবার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় এসপ্ল্যানেডগামী অফিসযাত্রীরা অনেকেই নেমে পড়ছেন নিউ গড়িয়া স্টেশনে। সেখান থেকে মেট্রো ধরে সটান চলে আসছেন এসপ্ল্যানেডে।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৬:৪৫
Share: Save:

গড়িয়া মোড় থেকে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পরে ভিড় কমে গিয়েছে ওই রুটের বাস এবং অটোরিকশায়। আবার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় এসপ্ল্যানেডগামী অফিসযাত্রীরা অনেকেই নেমে পড়ছেন নিউ গড়িয়া স্টেশনে। সেখান থেকে মেট্রো ধরে সটান চলে আসছেন এসপ্ল্যানেডে। আগামী পাঁচ-ছ’বছরের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো-সহ একাধিক মেট্রো রুট চালু হবে কলকাতায়। তার পরে এমন অনেক বাসরুটই প্রাসঙ্গিকতা হারাবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কলকাতার বাসরুটের বিন্যাস কী রকম হওয়া উচিত, তা আগে থাকতেই সমীক্ষা করতে চায় রাজ্য পরিবহণ দফতর। প্রাথমিক ভাবে এ জন্য তারা দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে। বিশ্বব্যাঙ্ক ওই কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক সমীক্ষার ভার তারা দিয়েছে ‘রাইটস’-এর উপর।

আগামী ১৭ ডিসেম্বর রাইটস এই সমীক্ষার কাজ শুরু করতে চলেছে। সেই লক্ষ্যে সরকারি নিগম এবং বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের বিভিন্ন সংগঠন ও রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসারকে নিয়ে ওই দিন বৈঠকে বসছে রাইটস। কোথায় কী রুট আছে, মেট্রো হওয়ার পরে মূলত কোন কোন রুটের উপরে তার প্রভাব পড়তে পারে বা কোন কোন রুটে নতুন করে বাস চালানো প্রয়োজন— তা নিয়ে আলোচনা শুরু করবে রেলের ওই সংস্থাটি।

এটাই প্রথম নয়, এর আগে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ঋণ ছাড়া প্রযুক্তিগত সাহায্য (নন-লেন্ডিং টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট) খাতে টিকিট ব্যবস্থার সমন্বয় সাধনের কাজও শুরু করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এ বার ওই খাতেই বাসরুট পুনর্বিন্যাসের কাজও শুরু করল তারা। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বেসরকারি বাস, মিনিবাস এবং সরকারি সব রুটেরই পুনর্বিন্যাসের জন্য এই সমীক্ষার কাজ শুরু করা হচ্ছে।

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো রুট দমদম থেকে টালিগঞ্জ এবং পরে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত চালু হয়। সে সময়ে বাসরুটের কোনও পুনর্বিন্যাস হয়নি। ফলে, মেট্রো রুটের বাসগুলির যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আবার মেট্রো স্টেশনে আসার জন্য নতুন বাসরুট চালু না হওয়ায় ওই সব রুটে অটোরিকশার রমরমা বেড়েছে। নতুন মেট্রো রুটগুলি চালু হওয়ার পরে একই সমস্যা যাতে ফের তৈরি না হয়, সে জন্যই আগে থাকতে সাবধান হচ্ছে সরকার।’’

এই মুহূর্তে কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ছাড়াও চলছে জোকা-বিবাদী বাগ এবং নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের কাজও। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে যাওয়ার পরে ওই সব প্রকল্পে গতিও এসেছে। এই অবস্থায় আগামী পাঁচ-ছ’বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলি চালু হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্য সরকার। ওই সব প্রকল্প চালু হলে বেহালা থেকে ধর্মতলা, ইএম বাইপাসের নানা রুট এবং উত্তর কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার সংযোগকারী বেশ কয়েকটি বাসরুটের জনপ্রিয়তা আর আগের মতো থাকবে না বলেই মনে করছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকারি, বেসরকারি— সব রুটই। সে কারণেই বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাহায্যে কলকাতার বাসরুটের নতুন চালচিত্র কেমন হতে পারে, সেটা ঠিক করে নিতে চাইছে পরিবহণ দফতর। এমনকী, কোথায় সরকারি আর কোথায় বেসরকারি বাস চলা উচিত, তা-ও প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষার রিপোর্টে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতে কলকাতার বাসরুটের পুনর্বিন্যাস করবে রাজ্য সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bus metro atri mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE