হাতির হানায় বাংলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও কোনও ভাবেই তা আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। বুধবার বিধানসভার অধিবেশনে উঠল সেই হাতির হানায় মৃত্যুর প্রসঙ্গ। কেন বার বার জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে হাতি? সেই প্রশ্নের উত্তরে মানুষকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। একই সঙ্গে সকলকে সতর্ক এবং সচেতন হওয়ারও বার্তা দিলেন তিনি। এগিয়ে আসতে বললেন বিধায়কদেরও।
হাতির হানায় মৃত্যু সম্পর্কে বলতে গিয়ে বুধবার বিধানসভায় বিরবাহা বলেন, ‘‘মানুষ বনের পশুদের বিরক্ত করেন। যে ভাবে বন্যপ্রাণীদের খাবার জঙ্গল থেকে বাজারে এনে বিক্রি করছেন, তাতে তারা বাইরে চলে আসছে।’’ বন্যপ্রাণীদের জঙ্গলে থাকার পরিবেশ নষ্টের নেপথ্যে দায়ী মানুষই, বিধানসভায় বিধায়কদের সেটাই বুঝিয়ে দিলেন বনমন্ত্রী। শুধু তা-ই নয়, এই বিষয়ে সকলকে সতর্ক হওয়ার কথাও বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বন্যপ্রাণীদের বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে। সচেতন করতে হবে। জঙ্গলের হাতি জঙ্গলে তখনই থাকবে, যখন তাদের কেউ সেখানে ঢুকে বিরক্ত করবেন না। আমরা জঙ্গলে যাচ্ছি। হাতির খাবার এবং থাকার পরিবেশ নষ্ট করছি।’’ পাশাপাশি, মানুষকে সচেতন করার ব্যাপারে বিধায়কদের সহযোগিতার জন্যও আবেদন করেন বিরবাহা।
আরও পড়ুন:
প্রায় প্রতি বছরই অনেক মানুষ হাতির হানায় মারা যান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওড়িশা থেকে সীমানা পেরিয়ে একটি হাতির দল ঢুকে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা রেঞ্জের দাঁতন থানা এলাকায়। রাস্তাতেই হাতির দলের মুখোমুখি হন রামু মুর্মু নামে বছর পঁয়ষট্টির এক বৃদ্ধ। তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে এক হাতি। মৃত্যু হয় তাঁর। গত বছর ডিসেম্বরে ঝাড়গ্রামে ঘটে একই ঘটনা। সেখানকার বাসিন্দা বাদল মুর্মুকে একই ভাবে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে এক দাঁতাল। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। ২০২৪ সালেই হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা আরও ঘটেছে। বনকর্মীরা প্রায়ই এই বিষয়ে গ্রামবাসীদের সতর্ক করেন। হাতি যাতে লোকালয়ে বেরিয়ে না আসে, তা আটকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপও করেন। কিন্তু কিছুতেই হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা আটকানো যাচ্ছে না। এ বার মানুষকে এই ব্যাপারে সচেতন হওয়ার কথা বললেন বনমন্ত্রী।