Advertisement
E-Paper

বিজ্ঞপ্তি জারি করুন, বাকি কোর্ট দেখে নেবে! ছাত্র সংসদ ভোট নিয়ে আদালত-নিদান, পরিচালন সমিতিতে থাকুন শুধু শিক্ষাবিদ

বিচারপতি সৌমেন সেনের মন্তব্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতিমুক্ত হওয়া উচিত। স্কুল এবং কলেজের পরিচালন সমিতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পরিবর্তে শিক্ষাবিদদের রাখা হোক।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১৫:০১

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিমুক্ত হোক। রাজ্যের কলেজগুলিতে নির্বাচন নিয়ে এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন না-হওয়া নিয়ে রাজ্যকে প্রশ্ন করেছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের আইনজীবী সওয়াল করে জানিয়েছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। তা ছাড়া রাজ্যের কাজ শুধু এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা। তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করুক রাজ্য, বাকিটা দেখে নেবে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে রাজ্য কী ভাবছে, তা-ও জানাতে হবে। দু’সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘গত শুনানিতে আপনারা বলেছিলেন উপাচার্য না থাকার জন্য নির্বাচন করা যাচ্ছে না। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তো উপাচার্য রয়েছেন। সেখানে কেন নির্বাচন হয়নি?’’ রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সুপারিশের প্রক্রিয়া চলছে। যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য রয়েছেন, সেখানে ভোট করানো যাবে না। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই অস্থায়ী উপাচার্যদের নীতি নির্ধারণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। অস্থায়ী উপাচার্যেরা দেখাশোনার কাজ করতে পারেন। তা ছাড়া বাড়তি কোনও সুবিধা পাবেন না। সেখানে এই অস্থায়ী উপাচার্যদের দিয়ে ভোট করানো হবে কী করে? বিচারপতি সেনের মন্তব্য, ‘‘আপনার কাজ কি ভোট করানো?’’ রাজ্যের আইনজীবী জানান, রাজ্যের কাজ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা। তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘তা হলে আপনি তা-ই করুন। বাকিটা আমি দেখব।’’ রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করে জানান, নির্বাচন করতে আপত্তি নেই। কিন্তু ২০১৭ সালের বিধিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিজ্ঞপ্তি নিয়ে রাজ্য কী ভাবছে, জানাতে হবে।

বিচারপতি সেনের আরও মন্তব্য, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতিমুক্ত হওয়া উচিত। স্কুল এবং কলেজের পরিচালন সমিতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পরিবর্তে শিক্ষাবিদের রাখা হোক।’’

ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলাটি করেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি হলফনামা তুলে ধরে তিনি জানান, রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কোনও ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। অনেক কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। বর্তমানে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে কোনও কার্যকর ছাত্র সংগঠন নেই।

এই অবস্থায় রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরকে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধ ছাত্র সংগঠন বা সংসদ নেই অথবা সম্প্রতি ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, সেখানে ছাত্র সংসদের কক্ষ বা ‘স্টুডেন্ট ইউনিয়ন রুম’ তালাবন্ধ করে রাখতে হবে। কোনও ছাত্র শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া ইউনিয়ন রুমে প্রবেশ বা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও ছাত্র যদি ইউনিয়ন রুমে প্রবেশের অনুমতির জন্য আবেদন করেন, তবে তার কারণ লিখিত ভাবে জানাতে হবে। এই নির্দেশ শুধুমাত্র ‘ছাত্র সংসদ কক্ষ’-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই নির্দেশ ছাত্রদের বিনোদন বা কমন রুমের জন্য নয়।

এর আগে গত মার্চ মাসে রাজ্যের কাছে এই বিষয়ে হলফনামা চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এ জন্য দু’সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দিয়েছিল। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে তারা কী ভাবনাচিন্তা করছে, তা জানাতে হবে রাজ্য সরকার এবং উচ্চশিক্ষা দফতরকে।

Calcutta High Court college election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy