স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দ্রুত শুনতে রাজি হল না কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত বিধির বিরোধিতা করে একাধিক মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই সোমবার উচ্চ আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এখনই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা হবে না।
সোমবার বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘‘২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অনেক বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির অনুরূপ নয়। নতুন এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়ম বদল হলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ আরও কমে যাবে।’’ এর পরেই বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানান, এসএসসির নতুন বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত বিষয়ে এখনই হস্তক্ষেপ করবে না হাই কোর্ট। বিচারপতি জানান, আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবে চলতে দেওয়া হবে। এর মধ্যে ফের কোনও অসুবিধা বা সমস্যা তৈরি হলে তখন আদালত বিষয়টি দেখবে। অন্যথায় আগামী জুলাই মাসে মামলা শুনবে আদালত।
আরও পড়ুন:
গত মাসের শেষেই ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের জন্য নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। পরীক্ষার বিধিতেও নানা বদল আনা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। অবকাশকালীন বেঞ্চের অনুমতিতে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ ওই মামলাগুলি করেছিলেন। মামলাকারীদের দাবি ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই করতে হবে। ২০২৫ সালের নিরিখে ন’বছর আগের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি নির্ধারণ করা অযৌক্তিক। শুধু তা-ই নয়, ২০১৬ এবং ২০২৫ সালের নম্বরের তুলনা করলে দেখা যাবে, আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হত। সেখানে এখন ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও, চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও নানা মাপকাঠি সংযোজন করা হয়েছে। যেমন, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপরেও থাকছে নির্দিষ্ট নম্বর। ফলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা, যাঁরা আগে অপেক্ষমাণ তালিকায়, অর্থাৎ ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন, তাঁরা যোগ্যতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা। এমনই নানা কারণ দেখিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানান মামলাকারীরা। সেই মামলা দ্রুত শুনতে চাইল না হাই কোর্ট।