ফের এসএসসি অভিযানের ডাক দিল ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। আগামী ১২ জুন, বৃহস্পতিবার সল্টলেক থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতর পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। এসএসসির জারি করা ফর্ম ফিল আপের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা, রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি (রিভিউ পিটিশন)-সহ আরও নানা দাবিতে ওই মিছিলের ডাক দিয়েছেন প্রায় ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক।
মঙ্গলবার দুপুরে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে আচার্য সদন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। চাকরিহারাদের দাবি, রিভিউ পিটিশনের আগে তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ফর্ম ফিল আপ করবেন না। পরীক্ষাতেও বসবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সরকারকে ফর্ম ফিল আপের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি, সরকারি নির্দেশের পর কোন কোন শিক্ষক স্কুলে যাচ্ছেন, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্যও জানাতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ১৬ জুন থেকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ফর্ম ফিল আপ শুরু হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা ব্যবস্থা শেষ করতে হবে রাজ্যকে। সে জন্যই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাজ্য। যদিও চাকরিহারারা পরীক্ষা দিতে রাজি নন। যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকাপ্রকাশের দাবিতে এর আগে এপ্রিল মাসে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে অভিযান করেছিলেন তাঁরা। এসএসসি চেয়ারম্যান-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও করে রেখে তিন দিন ধরে টানা অবস্থান চালিয়েছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। সেই আবহেই আবারও এসএসসি অভিযানের ডাক দিল চাকরিহারাদের মঞ্চ।
এ বিষয়ে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর তরফে মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘এসএসসি-র কাছে আমরা বেশ কিছু দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা বার বারই আইনি বাধ্যবাধকতার কারণ দেখিয়ে আমাদের ঘোরাচ্ছেন। পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্যের হাতে রয়েছে। আমাদের এই দু’টি দাবি পূরণ না হলে আমরা বুঝে নেব, রাজ্য সরকার আমাদের সঙ্গে নেই।’’
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো ২০১৬ সালের বাতিল হওয়া প্যানেলের জন্য চলতি বছরই নতুন করে পরীক্ষা নিতে চলেছে এসএসসি। সেই মতো গত মাসের শেষে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন পরীক্ষাবিধিতেও নানা বদল আনা হয়েছে। আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হত। সেখানে এখন ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও, চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও নানা মাপকাঠি সংযোজন করা হয়েছে। যেমন, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপরেও থাকছে নির্দিষ্ট নম্বর। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে থাকছে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। শুধু তা-ই নয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছে এসএসসি।