সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র শংসাপত্র দিতে দেরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কারণে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনে (এসআইআর) আবেদন করা যাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই আবেদন জনস্বার্থ মামলা হিসাবে বিবেচনা করা যায় না। সেই এক্তিয়ার নেই আদালতের। তবে আলাদা ভাবে আবেদন করার সুযোগ পাবেন মামলাকারীরা।
‘আত্মদীপ’ নামে সংগঠন সিএএ এবং এসআইআর নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল। তাদের অভিযোগ, সিএএ-র শংসাপত্র দিতে দেরি করছে কেন্দ্র। অনলাইনে আবেদনকারীদের রসিদ সরকারি প্রমাণপত্র হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। শুনানিতে মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘু শরণার্থীদের সিএএ বা এনআরসি শংসাপত্র দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ওই শংসাপত্র দিতে দেরি করায় এসআইআরে আবেদন করা যাচ্ছে না। ফলে ভবিষ্যতে ভোটাধিকার হারানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
মামলাকারীদের বক্তব্য, নাগরিকত্ব আবেদনের রসিদকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে বহু মানুষ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন। হারাবেন নাগরিকত্বও। মামলাকারীদের আশ্বস্ত করে কেন্দ্র আদালতে জানায়, তাঁদের অভিযোগ ১০ দিনের মধ্যে বিবেচনা করা হবে।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আদালতে কেন্দ্র জানায়, রাজ্যকে ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন পাঠাতে হয়। সময়ে তা পাঠানো হয়নি বলেই কাজ থমকে গিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নেবে। পাল্টা রাজ্যের বক্তব্য, জেলাশাসকের মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়নি। অনেকে সরাসরি পোর্টালে আবেদন করেছেন। সেখানে রাজ্য পাঠাবে কী ভাবে? সব পক্ষের সওয়াল-জবাবের শেষে আদালত জানায়, তারা এই মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না। ফলে আপাতত শরণার্থীদের এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলে রইল।
এই মামলার শুনানিতে হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাস, মামলায় যুক্ত সিএএ আবেদনকারীদের বক্তব্য ১০ দিনের মধ্যে বিবেচনা করা হবে। যদিও ওই বিষয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। একই সঙ্গে কেন্দ্রের বক্তব্য, কেউ আলাদা ভাবে আবেদন করতে পারেন।