প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকপদে নিয়োগ পরীক্ষার ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্র বিকৃতি নিয়ে তোলপাড় চলছে। তার মধ্যে এ বার উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও উত্তরপত্র বিকৃতির ইঙ্গিত মিলেছে বলে আদালত সূত্রের খবর। সেই ইঙ্গিত মিলেছে এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের হলফনামা থেকেই। যে-সব প্রার্থীর উত্তরপত্রে গরমিল আছে, মেধা-তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে আদালতে পেশ করা ওই হলফনামায়।
এসএসসি সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের মেধা-তালিকা নিয়ে একটি হলফনামা জমা দেয়। কোর্টের খবর, উচ্চ প্রাথমিক স্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১১ এবং ২০১৫ সালের উচ্চ প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল।
হলফনামায় জানানো হয়েছে, ইন্টারভিউয়ের পরে এসএসসি মেধা-তালিকা তৈরি করতে গিয়ে দেখেছে, মোট ১৪৬৩ জনের উত্তরপত্রে গরমিল আছে। তার মধ্যে ৫৫৯ জনের উত্তরপত্রের নম্বরের সঙ্গে এসএসসি-র নম্বর মিলছে না। ৯০২ জনের ক্ষেত্রে নম্বরের গরমিলের পাশাপাশি উত্তরপত্র নষ্ট করা হয়েছে। দু’জনের জাতিগত পরিচয়ে গোলমাল আছে। তবে ২০১১ সালের টেট অনেক আগে হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীদের মার্কশিট, সার্টিফিকেট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই উত্তরপত্র মিলিয়ে দেখা যায়নি।
কর্মপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এ দিন বলেছেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রেও যে অনিয়ম হয়েছিল, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। তবে এ ক্ষেত্রে আগে মামলা হওয়ায় নিয়োগের সুযোগ হয়নি।’’ উচ্চ প্রাথমিক নিয়ে বহু দিন ধরেই আইনি জটিলতা চলছে। এর আগে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিলেন এবং নতুন ভাবে প্যানেল তৈরি করার নির্দেশ দেন।
এসএসসি এ দিন হলফনামায় জানিয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছিল ১৭,০২৪ জন প্রার্থীকে। উপস্থিত হন ১৪,০৫২ জন। ১৪৬৩ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার পর মেধা-তালিকায় ১২,৫৮৯ জন স্থান পেয়েছেন। তবে ঘোষিত শূন্য পদ ১৪,৩৩৯টি। উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা চান, কোনও যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত না-করে দ্রুত মেধা-তালিকা প্রকাশ করে কাউন্সেলিং শুরু করে দিক স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)