প্রথমে দুর্নীতির তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্ত নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানান। তার পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে দ্রুত বিচার-পর্ব শুরুর নির্দেশ দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
মঙ্গলবার হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, নিম্ন আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জ গঠন করতে হবে এবং শুনানি শুরু করতে হবে। দ্রুত শুনানি শেষ করে মামলার নিষ্পত্তির জন্য যথাযথ পদক্ষেপও করতে হবে। ঘটনাচক্রে, আগামিকাল, বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানি আছে। সেই হিসেবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার চার্জ গঠন হওয়ার কথা। আজ, বুধবার দুপুরে আর জি কর মামলার শুনানি আছে সুপ্রিম কোর্টে। নির্যাতিতার পরিবারের আর্জি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।
সূত্রের খবর, আর জি কর দুর্নীতি মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে সেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। নভেম্বর মাসে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে সরকারি কর্মী হিসেবে চার্জ গঠনের জন্য রাজ্যের ‘ছাড়পত্র’ দরকার ছিল। সোমবার সেই ছাড়পত্র সিবিআইয়ের হাতে পৌঁছেছে বলেও সূত্রের দাবি। সিবিআই সূত্রের আরও দাবি, আগামিকাল, বৃহস্পতিবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জ গঠনের আবেদন করা হতে পারে। সে দিন সন্দীপ-সহ পাঁচ অভিযুক্তকেও জেল হেফাজত থেকে হাজির করানো হবে। মামলার সাক্ষী তালিকাও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আর জি করে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন ওই হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। হাসপাতালের তহবিল নয়ছয় এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। এ ব্যাপারে রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসনে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। তবে তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আর জি করে পড়ুয়া-চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের পরে আখতার আলি হাই কোর্টে মামলা করেন। সেই
মামলায় সিবিআই এবং ইডি-কে তদন্তভার দেয়।
এ দিন সিবিআইয়ের হয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান যে, ঘটনার তদন্তে নেমে ২২টি জায়গায় তল্লাশি হয়েছে। দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি সন্দীপ-সহ একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডি-র কৌঁসুলি জানান যে, তাঁরাও তদন্ত করছেন। আখতার আলির আইনজীবীরা
আর্জি জানান, মামলার নিষ্পত্তি যেন না করা হয় এবং তদন্তে আদালত নজরদারি করুক।
নজরদারির আর্জি খারিজ করে দেন বিচারপতি। ইডি-র তদন্ত নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ, একাধিক মামলায় দেখা গিয়েছে যে, ইডি তদন্ত করে, কিন্তু চার্জশিটও দেয় না। বিচারও শুরু হয় না। ইডি নিজেদের মতো তদন্ত করছে।তাই আদালতের নজরদারির প্রয়োজনও নেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)