Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

আদালতের নির্দেশে পাওনা ফিরে পেলেন প্রধান শিক্ষক 

আদালতের স্থগিতাদেশের জেরে ২০১৩ সালে অবসরের সময় থেকে পুরো পেনশনই বন্ধ হয়ে যায় তাঁর! 

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আদালতের নির্দেশে পেনশন চালু হল শিক্ষকের।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আদালতের নির্দেশে পেনশন চালু হল শিক্ষকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৩৪
Share: Save:

তেত্রিশ বছর শিক্ষকতা করেছেন। তার মধ্যে এক দশক ধরে সামলেছেন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও। কিন্তু অবসরের মুখে এসে কল্যাণকুমার মিরবর শুনেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে স্নাতকোত্তর পাশের জন্য বিগত বছরের বেতনবৃদ্ধির সুবিধা তিনি পেনশনে পাবেন না। প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্যও অবসরকালীন সুবিধা পাবেন না। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। তার পরে আদালতের স্থগিতাদেশের জেরে ২০১৩ সালে অবসরের সময় থেকে পুরো পেনশনই বন্ধ হয়ে যায় তাঁর!

দীর্ঘ আট বছর ধরে পেনশন পাচ্ছিলেন না তিনি। এর মাঝে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের মামলায় হেরেছেন। গত বছর সেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। শুক্রবার তার রায় বেরিয়েছে। কল্যাণবাবুর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে কল্যাণবাবুর পাওনা মিটিয়ে দিতে বলেছেন রাজ্যকে।

কল্যাণবাবুর কথায়, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি সপরিবার এ দেশে এসেছিলেন। ১৯৭২ সালে ফিরে যান সে দেশে। সে দেশে বাংলায় স্নাতকোত্তরের পাঠ শেষ করে ১৯৭৯ সালে এ দেশে আসেন। ১৯৮০ সালে দক্ষিণ শহরতলির নেতাজিনগরের একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন। পরে চাকরিতে সরকারি স্বীকৃতিও পান তিনি। ২০০২ সালে প্রধান শিক্ষকের পদে আবেদন করেন। ২০০৩ সালে বিজয়গড়ের একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন। ২০১২ সালে পেনশনের আঠেরো মাস আগে নথিপত্র জমা দিতে গিয়ে জানতে পারেন, বাংলাদেশ থেকে এক বছরের এমএ ডিগ্রি পাশ করায় এখানে তা গ্রাহ্য হবে না। তাই চাকরির বহু সুবিধা তিনি পাবেন না। এর বিরুদ্ধেই মামলা করেন তিনি।

শুক্রবার কল্যাণবাবু জানিয়েছেন, হাইকোর্ট পুরো বিষয়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় পেনশন আটকে যায়। অবসরের পরে পেনশন না-মেলায় কার্যত নিঃসম্বল হয়ে পড়েন তিনি। এর মধ্যে ২০১৯ সালের শেষে তাঁর বিরুদ্ধে রায় দেয় হাইকোর্ট। কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘ওই রায়ের সময় আমি রাজ্যের বাইরে ছিলাম। ফেরার পরে লকডাউন হয়ে যায়।’’ তিনি জানান, লকডাউন শিথিল হলে সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। অসহায় অবস্থা দেখে কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই সুদীপ্তবাবু মামলা লড়তে রাজি হন।

আদালতের রায় শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে কল্যাণবাবু বলছেন, ‘‘এই আট বছর পেনশন ছাড়া কী ভাবে সংসার চালিয়েছি, তা আমি জানি। এত দিন শিক্ষকতা করেছি, এত ছাত্র রয়েছে চার পাশে। অন্য কোনও কাজ করে উপার্জন করে আয় করব, তা-ও সঙ্কোচবশত করতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Pension
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE