শিশুকন্যা ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সুরেশ পাসোয়ানের মৃত্যুদণ্ডের সাজা খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ নগর দায়রা আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অভিযুক্তের বয়স এবং মামলার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত দোষীকে মৃত্যুর সাজার পরিবর্তে আজীবন কারাদণ্ড দিল। গ্রেফতারের দিন থেকে পরবর্তী ৫০ বছর পর্যন্ত তিনি জেলে থাকবেন। পাশাপাশি, পকসো আইনে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে, হাই কোর্ট তা বহাল রেখেছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, দোষীর বয়স ৪৫ বছর। তার পরিবার গরিব। বিয়ে করেছিলেন। পরে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। কলকাতার হেস্টিংস এলাকায় ঘোড়ার আস্তাবলে থাকত দোষী। তার অপরাধ পূর্বপরিকল্পিত এবং মৃতের পরিবারের উপর শত্রুতা বা প্রতিহিংসার বশে করেছেন, সে কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘‘অনেক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, প্রতিটি হত্যাই ভয়াবহ। কিন্তু সব ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড প্রযোজ্য নয়। এই মামলাতেও আমরা এমন কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারিনি যে, এটি ‘সবচেয়ে বিরলতম’ শ্রেণির মধ্যে পড়ে। যার কারণে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিতেই হবে।’’
কলকাতার হেস্টিংস উড়ালপুলের নীচে বসবাসকারী এক পরিবারের আড়াই বছরের শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ২০১৩ সালের ২১ জুলাই রাতে। পরের দিন সকালে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কাছের একটি ড্রেনে ওই শিশুর দেহ পাওয়া যায়। তার শরীরে ধর্ষণ ও নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশ সুরেশকে গ্রেফতার করে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাবে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করে সুরেশ। সে-ই শিশুটিকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও খুন করে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান, মেডিক্যাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং যে জায়গা থেকে শিশুটির পোশাক উদ্ধার হয়েছে, তার ভিত্তিতে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত। তাকে মৃত্যুর সাজা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সেই সাজা খারিজ করে দিল হাই কোর্ট।