অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে রাজ্যের পুলিশ ব্যর্থ হলে মোতায়েন করা হতে পারে কেন্দ্রীয় বাহিনী। একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই জানালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। নারকেলডাঙার একটি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পাঁচতলা ওই বাড়িটি খালি করতে পারছে না প্রশাসন। কলকাতা পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না, আদালতে জানিয়েছে পুরসভা। সোমবার পুলিশ এবং পুরসভাকে বিচারপতি জানিয়েছেন, ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাড়িটি ভাঙতে না-পারলে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেবেন তিনি।
কলকাতা পুরসভার বরো-৩ এলাকার অন্তর্গত নারকেলডাঙা। সেখানে একটি পাঁচতলা বাড়ি বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। নির্মাণটি খতিয়ে দেখে পুরসভাও জানায়, তা অবৈধ। হাই কোর্টে এই মর্মে রিপোর্ট দেয় তারা। এর পর বিচারপতি সিংহ গত মাসে বাড়িটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোমবার পুরসভার তরফে আদালতে জানানো হয়, ওই বাড়ির একতলা ইতিমধ্যে খালি করা হয়েছে। কিন্তু বাড়ি থেকে বাকি বাসিন্দাদের সরানো যাচ্ছে না। পুলিশের সহযোগিতাও মিলছে না বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
কলকাতা পুলিশের তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, নারকেলডাঙার ওই বাড়িটিতে ইতিমধ্যে তারা নোটিস সেঁটে দিয়েছে। বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। পুলিশের কাজে যাতে কোনও বাধা না-আসে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এর পরেই আদালত জানায়, পুলিশ এই কাজ করতে না-পারলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে।
বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, পুলিশ কাজ না-করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। প্রশাসনকে আরও এক মাস সময় দিয়েছেন তিনি। নির্দেশ, ১০ মার্চের মধ্যে বাড়ি ভাঙার কাজ শেষ করতে হবে। না হলে আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিতে বাধ্য হবে। ১০ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতার নানা প্রান্ত থেকে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বাঘাযতীনে চারতলা বাড়ির একাংশ ভেঙে হেলে পড়ার পর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, শহরের কলোনি এলাকায় অধিকাংশ বাড়িই বেআইনি ভাবে নির্মিত। পূর্বতন সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও একাধিক হেলে পড়া বাড়ির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কিছু বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে পুরসভা। সেই আবহেই এ বার নারকেলডাঙার বেআইনি নির্মাণ ভাঙার বিষয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা বললেন বিচারপতি সিংহ।