Advertisement
০২ মে ২০২৪
Calcutta High Court

জেলে কী ভাবে অন্তঃসত্ত্বা বন্দিরা? রাজ্যের কাছে ফের রিপোর্ট তলব করল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ

শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের জেলগুলিতে বন্দিদের অতিরিক্ত ভিড় এবং নিরাপত্তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে।

Calcutta High Court wants report of West Bengal state administration again on pregnancy case

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৬
Share: Save:

রাজ্যের জেলগুলিতে মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘটনায় যে মামলা হয়েছিল, তাতে ফের রাজ্যের বক্তব্য জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের জেলগুলিতে বন্দিদের অতিরিক্ত ভিড় এবং নিরাপত্তা নিয়ে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে।

রাজ্যের ১৩৭৯টি সংশোধনাগারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে রাজ্য লিগাল এড সার্ভিস (এসএলএএস)-কে ওই একই সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তা ছাড়াও জেলগুলির পরিস্থিতির উপরে নজরদারি চালানোর জন্য রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) এবং অন্য সরকারি কৌঁসুলিদের নিয়ে একটি কোর কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার রাজ্যের সংশোধনাগারগুলির পরিস্থিতি জানিয়ে আদালতে একটি রিপোর্ট দেন আদালতবান্ধব তাপস ভঞ্জ।

এর আগে রাজ্যের জেলে মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনার মামলায় যুক্ত সব পক্ষকে বৈঠক বসার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, সব পক্ষকে নিয়ে রাজ্যকে বৈঠকে বসতে হবে। সেখান থেকে কী উঠে এল, রাজ্যের এজি-কে তা নিয়ে ৮ মার্চ রিপোর্ট দিয়ে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বিচারপতি এ-ও জানিয়েছিলেন, গর্ভধারণ সংক্রান্ত কোনও পরীক্ষা নিয়ে আদালত নির্দেশ দেবে না।

এই মামলায় বিচারপতির বাগচীর পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘এমন ঘটনায় সমাজে কী প্রভাব পড়ে, তা আমরা জানি। এমনিতেই ওই মহিলারা জেলে রয়েছেন। সেই অবস্থায় এমন ঘটনা তাঁদের আরও বেশি কলঙ্কিত করে। ওই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের এটা মাথায় রাখা জরুরি।’’ গত ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতবান্ধব সওয়াল করে জানান, জেলে ঢোকার পরে মহিলাদের পুরুষ বন্দিদের সেলের সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মহিলাদের জন্য আলাদা রাস্তা বা প্রবেশপথ নেই। এর ফলে অনেক সময় পুরুষ বন্দিরা হায়নার মতো আচরণ করেন। এটা আটকানো দরকার। আর মহিলা কয়েদিদের নিয়মিত ‘প্রেগন্যান্সি টেস্ট’ করানো হোক।

এই বিষয়ে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আদালতবান্ধব তাপস। তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে মহিলা কয়েদিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি, সংশোধনাগারে পুরুষদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আর্জিও উচ্চ আদালতে জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তাপস।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন জেলের কয়েদিদের সুযোগ-সুবিধার কথা মাথায় রেখে আদালতবান্ধব নিয়োগ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। সংশোধনাগারের মধ্যে কয়েদিরা ঠিক করে খাবার বা চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না, তা দেখার দায়িত্ব আদালতবান্ধবের। পাশাপাশি, কয়েদিদের জীবনযাপনে কোনও অব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে আদালতবান্ধব তাপসের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে ১৯৬ জন শিশু জন্ম নিয়েছে। সম্প্রতি, আলিপুর মহিলা জেলেও এক জন কয়েদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তাই ৮ ফেব্রুয়ারি বিচার চেয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এই ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সব রাজ্যের কাছে রিপোর্টও তলব করে শীর্ষ আদালত। জানতে চায়, জেলে মহিলারা কী অবস্থায় রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court pregnant Jail Inmates
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE