Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

সিপিএম কর্মী খুনে সিট গঠনের নির্দেশ, নজরদারির ভার দময়ন্তীকে দিলেন বিচারপতি মান্থা

২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন সিপিএম সমর্থক বলে পরিচিত দেবপ্রসাদ দাস এবং ঊষারানি দাসের মৃত্যু হয় অগ্নিদগ্ধ হয়ে। তাঁদের সন্তান দীপঙ্কর দাসের দাবি, বাবা-মাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে।

দময়ন্তী সেনকে তদন্তের ভার দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।

দময়ন্তী সেনকে তদন্তের ভার দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৪০
Share: Save:

৫ বছর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে জোড়া খুনের ঘটনায় সিট গঠন করে আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনকে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, পছন্দের অফিসারদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করবেন দময়ন্তী। এই মামলার তদন্ত করে তারা চার্জশিট জমা দেবে।

২০১৮ সালের ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন স্থানীয় সিপিএম কর্মী দেবপ্রসাদ দাস এবং তাঁর স্ত্রী ঊষারানি দাসের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। তাঁদের সন্তান দীপঙ্কর দাসের দাবি, বাবা-মাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, খুনের মামলা রুজু হওয়ার পর এত দিনেও তদন্ত কিছু এগোয়নি। তাঁর আরও অভিযোগ, আসল অপরাধীদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ঘটনাটির পুনরায় তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে যান দীপঙ্কর। ঘটনার দিন রাতে নিজেদের ঘরের মধ্যেই পুড়ে মৃত্যু হয় দেবপ্রসাদ ওরফে দেবু দাস ও ঊষারানি দাসের। ঘটনায় সিপিএমের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের বিরোধিতা করায় শাসকদলের লোকজনই পুড়িয়ে মেরেছে দাস দম্পতিকে। দেবপ্রসাদবাবুর ছেলে দীপঙ্কর সেই সময় দাবি করেন, তিনি কেটারিংয়ের কাজ সেরে ফেরার সময় অমিত মণ্ডল, অশোক মণ্ডলের মতো স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল নেতাকে তাঁদের বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে দেখেছিলেন।

সেই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের উপস্থিতিতে এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মা জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে ওই দম্পতির। যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল এলাকা। তা ছাড়া শর্ট সার্কিট হলে বিদ্যুতের তার, সুইচ বোর্ড বা বৈদ্যুতিন সামগ্রী যে ভাবে পুড়ে যাওয়ার কথা, সে রকম নমুনা মেলেনি। ফলে প্রথম থেকেই এই মামলা নিয়ে একাধিক সন্দেহের অবকাশ ছিল। যদিও পরে পুলিশ নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে খুনের মামলা রুজু করে। এফআইআরে ১০ জনের নাম ছিল। কিন্তু মৃত দম্পতির ছেলে এবং জেলা সিপিএমের তরফে অভিযোগ তোলা হয় যে, পুলিশ আসল অপরাধীদের আড়াল করে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদেরই গ্রেফতার করছে।

প্রসঙ্গত, এই রাজাশেখর মান্থাকে নিয়েই বিগত কয়েক দিনে উত্তপ্ত হয়েছে হাই কোর্ট চত্বর থেকে রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূলপন্থী হিসেবে পরিচিত এক দল আইনজীবী বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট করেন। অন্য বিচারপতিদেরও মান্থার এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া দু’দল আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় বার কমিশন। মান্থার নামে বেনামী পোস্টার পড়ার ঘটনাতেও একপ্রস্ত জলঘোলা হয়। অপর দিকে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে ‘স্বতন্ত্র’ মত রেখে সরকারের বিরাগভাজন হয়েছিলেন আইপিএস অফিসার দময়ন্তী। তবে তাঁকে ডাকাবুকো পুলিশ অফিসার বলেই চেনে পুলিশমহল। অতীতে সংবাদ শিরোনামে আসা দময়ন্তীকেই পুরনো খুনের মামলায় তদন্তভার দিলেন অধুনা শিরোনামে থাকা মান্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE