Advertisement
০২ মে ২০২৪
TET

১৬,৫০০ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কত জন ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন? নানা তথ্যে বিভ্রান্ত প্রার্থীরা

চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ধাপে ধাপে সবার নিয়োগের কথা বলেছিলেন। তা হলে কেন তাঁদের আবার নতুন করে ১১ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে?

চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিবাদ।

চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিবাদ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবদাদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৪
Share: Save:

এক-এক বার এক-এক রকমের পরিসংখ্যান! আর পরস্পরবিরোধী সেই পরিসংখ্যানের কারণেই ২০১৪ সালের দ্বিতীয় দফার ১৬,৫০০ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ঠিক কত জন ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন, তার হিসাব মিলছে না বলে অভিযোগ উঠল।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটের দ্বিতীয় দফার নিয়োগের সময় ঠিক কত জন ইন্টারভিউ দিয়েছেন সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি গৌতম পাল ভিন্ন ভিন্ন হিসাব দিয়েছেন।

সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নবান্ন সভাঘরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, টেট পাশ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার। এই ২০ হাজারের সবাইকে ধাপে ধাপে নিয়োগ করা হবে। প্রথমে ১৬,৫০০ জন এবং বাকি সাড়ে তিন হাজার পরে চাকরি পাবেন। চাকরিপ্রার্থীদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী টেট পাশ প্রশিক্ষিত সবাইকে নিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তার মানে মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ের প্রার্থী সংখ্যাও ছিল কমপক্ষে ২০ হাজার।

এক চাকরিপ্রার্থী অচিন্ত্য ধারা বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন শুরু হল, তখন আদালতে একটি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের উকিল একটি প্রশ্নের উত্তরে জানান, ইন্টারভিউতে বসেছেন ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থী। এ দিকে সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, বর্তমানে ২০১৪ সালের নট ইনক্লুডেড প্রার্থী রয়েছে ১৬,১০১ জন। আর নিয়োগ হয়েছে ১৩,৮৫৮ জনের। তা হলে মোট ইন্টারভিউয়ের সংখ্যা হল ২৯,৯৫৯ জন।”

অচিন্ত্য সামন্ত নামে আর এক চাকরিপ্রার্থীর প্রশ্ন, “কোনটা ঠিক? কে সত্যি কথা বলছেন? মুখ্যমন্ত্রীর কথা সত্যি ধরে নিলে ভুয়ো চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ন’হাজারের মতো। অন্য দিকে মানিকের কথা সত্যি ধরলে ভুয়ো প্রার্থীর সংখ্যা তিন হাজারের কিছু বেশি।” চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এই অস্বচ্ছতা দূর করা জন্য নম্বরের বিভাজন-সহ মেধা তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হোক।

অচিন্ত্যদের মতে, তাঁরা সমীক্ষা করে দেখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যানই সঠিক। কারণ, তাঁদের হিসাব অনুযায়ী নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা কোনও ভাবেই সাত হাজারের বেশি নয়। মুখ্যমন্ত্রীর হিসাব অনুসারে যদি মোট ইন্টারভিউয়ের চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার হয়, তা হলে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন ১৩ হাজারের কিছু বেশি। বাকি নট ইনক্লুডেড সাত হাজারের মতো চাকরিপ্রার্থী পড়ে রয়েছেন। যেটা তাঁদের হিসাবের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ধাপে ধাপে সবার নিয়োগের কথা বলেছিলেন। তা হলে কেন তাঁদের আবার নতুন করে ১১ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে? চাকরিপ্রার্থীদের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস এখনও বাস্তবায়িত হল না। এখন আবার বলা হচ্ছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করলে এক বছরের মধ্যে সবার নিয়োগ হয়ে যাবে। কারণ বছরে দু’বার নিয়োগ হবে। এটাই বা কতটা বিশ্বাসযোগ্য? আমাদের অনেকেরই বয়স তো চাকরি পাওয়ার সর্বোচ্চ বয়স (৪০ বছর)-এর সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET Protest Mamata Banerjee Manik Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE