সীতারাম গুপ্ত
অন্যদের মতোই স্টেশনের বাইরের স্ট্যান্ডে এসে চার যুবক খোঁজ করছিলেন ভাড়া গাড়ির। বেশি ভাড়া দিতে চাইলেও তাঁদের গতিবিধি ‘সন্দেহজনক’ হওয়ায় অধিকাংশই চালকই তাঁদের নিতে চাইছিলেন না। শেষমেষ রাজি হন এক চালক। কিছুটা বেশি ভাড়া পাওয়ার জন্য ওই চার যুবককে গাড়িতে বসিয়ে রওনা দেন বাসন্তী হাইওয়ের দিকে।
সংশয় দানা বেঁধেছে তার পর থেকেই। তিন দিন আগে চার যুবককে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিকে রওনা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ সেই গাড়ি চালক। বুধবার বিকেলে হাওড়ার সাঁতরাগাছি স্টেশনের ঘটনা। এ নিয়ে জগাছা থানায় একটি নিখোঁজের মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে বেরিয়ে চার যুবক কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রাইভেট গাড়ির স্ট্যান্ডে আসেন। ওই যুবকদের এক জনের পিঠে ব্যাগ ছিল। বাকিরা সকলেই ছিলেন খালি হাতে। ২৫-৩০ বছরের ওই যুবকেরা স্ট্যান্ডে এসে ভাঙড় থানার বাসন্তী হাইওয়ের পাশে ঘটকপুকুরের জীবনতলায় যাওয়ার জন্য গাড়ি খুঁজছিলেন। ওই স্ট্যান্ডের অন্যান্য চালকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুবকদের দেখে সুবিধার মনে হচ্ছিল না। তাই তাঁরা কেউই যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। এক সময় বেশি ভাড়া দিতেও রাজি হন ওই যুবকেরা। কিন্তু তাতেও কেউ রাজি হননি। শেষমেষ সাঁতরাগাছি জিআইপি কলোনির বাসিন্দা সীতারাম গুপ্ত নামের এক চালক ঘটকপুকুর যেতে রাজি হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চার যুবককে ছয় আসনের গাড়িতে (ডব্লিউ বি-০৬ জি ৯৯৭২) বসিয়ে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন সীতারাম। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও তিনি আর স্ট্যান্ডে ফেরেননি। ওই দিন অন্য চালকেরা মনে করেছিলেন রাত হয়ে গিয়েছে বলে হয়তো বাড়ি চলে গিয়েছেন সীতারাম। কিন্তু পরের দিন সকাল হতেই পরিবারের লোকেরা গাড়ির মালিক মানিক মণ্ডলকে বিষয়টি জানান। তিনি স্ট্যান্ডে এসে পুরো ঘটনাটি জানতে পারেন। এরপরে জগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মানিকবাবুই।
সীতারামের পরিজনের জানান, ওই দিন দুপুরে বাড়িতে মোবাইল চার্জে বসিয়ে রেখেই তিনি স্ট্যান্ডে চলে গিয়েছিলেন। ফলে মোবাইলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনও উপায় নেই। অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ সাঁতরাগাছি থেকে ঘটকপুকুর যাওয়ার রাস্তায় যেখানে যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে সেখানকার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারীদের অনুমান, কোনও গাড়ি পাচার চক্র বা দুষ্কৃতী দলের খপ্পরে পরেছেন ওই চালক। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পাশাপাশি ঘটকপুকুরে গিয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy