Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Carnival

হিমালয়-ঘেঁষা বাংলাকে তুলে ধরতে কার্নিভাল 

হিমালয়ের অংশীদার হিসাবে বাংলাকে হাজির করে করোনাকালে পর্যটনের বিকাশই কার্নিভালের উদ্দেশ্য।

কৌশিক চৌধুরী 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৯
Share: Save:

হিমালয় ঘেরা অঞ্চল বলতে শুধু নেপাল, ভুটান বা সিকিমের বড় বড় শৃঙ্গ, পাহাড় বা উপত্যকা নয়, বাংলার একাংশও হিমালয়ের কোলেই। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে রাজ্য পর্যটন দফতরের নতুন ‌ভাবনা, ‘বেঙ্গল হিমালয়ান কার্নিভাল’।

আগামী মাসের শুরুতে দার্জিলিং, কালিম্পং ও গজলডোবাকে ঘিরে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। ‘হেরিটেজ ওয়াক’ থেকে স্টোরি টেলিং, পাখি দেখা থেকে আদিবাসী নাচ। স্থানীয় হস্তশিল্প থেকে খাওয়া-দাওয়া কিছুই বাদ যাবে না। হিমালয়ের অংশীদার হিসাবে বাংলাকে হাজির করে করোনাকালে পর্যটনের বিকাশই কার্নিভালের উদ্দেশ্য। করোনা আবহের ‘নিউ নর্মাল’ পরিস্থিতিতে এটাই প্রথম পর্যটন দফতরের পুরোদস্তুর অনুষ্ঠান বলা চলে।

সরকারি সূত্রের খবর, আপাতত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পরপর তিনদিন কার্নিভালের দিনক্ষণ স্থির হয়েছে। ওই সময়েই উত্তরবঙ্গ উৎসবের দিনও স্থির হয়েছে। তার দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব নিজের দফতরে পর্যটন সংগঠন ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে’র সদস্যদের নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা সেরেছেন। তাতে দার্জিলিঙে ৫, কালিম্পঙে ৬ এবং ভোরের আলোয় ৭ ফেব্রুয়ারি কার্নিভাল হওয়ার কথা। কিন্তু দার্জিলিঙে চৌরাস্তায় উত্তরবঙ্গ উৎসব শেষ হচ্ছে ৪ ফেব্রুয়ারি। পরদিন ম্যাল চৌরাস্তায় কার্নিভাল করা সম্ভব, নাকি দিন বদল করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

পর্যটন মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের পর্যটন বিকাশের জন্যই কার্নিভালটি হবে। আলোচনা, বৈঠক চলছে। করোনা পরবর্তীতে পর্যটন শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। পর্যটকদের মধ্যেও ধীরে ধীরে ঘোরার প্রবণতা বাড়ছে।’’

আপাতত স্থির হয়েছে, শৈলশহরের ম্যাল চৌরাস্তায় বিখ্যাত দার্জিলিং পুলিশের ব্যান্ড দিয়ে কার্নিভালের সূচনা হবে। দার্জিলিং ঘিরে নানা ইতিহাস, গল্প এবং ঘটনাকে তুলে আনা হবে দু’টি ভাগে। প্রথমটি ‘হেরিটেজ ওয়াক’। দ্বিতীয়টি স্টোরি টেলিং বা গল্প বলা। রবীন্দ্রনাথ থেকে বড়লাট বা মর্গান হাউসের ভূতের গল্প জমিয়ে তোলা হবে মজলিসে। সারাদিন থাকবে স্থানীয় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। স্থানীয় ব্যবসায়ী, হস্তশিল্পের উদ্যোগী, কারিগরদের নিয়ে বসবে হস্তশিল্প বাজার। শীতের পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের থেকে শুরু করে স্থানীয়েরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন কার্নিভালে। সন্ধ্যা থেকে চলবে পাহাড়ের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই গানের ব্যান্ডের অনুষ্ঠান। পরদিন, কার্নিভাল কালিম্পঙে ডেলো’র মাঠে। দার্জিলিঙের প্রতিটি অনুষ্ঠানের সঙ্গে কালিম্পঙে থাকবে রকমারি খাবারের ফুড ফেস্টিভ্যাল এবং ছবির প্রদর্শনী।

তিনদিনের কার্নিভাল শেষ হবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘ভোরের আলো’য়। ডুর্য়াস-তরাইয়ের মেলবন্ধনের এলাকা থেকে হিমালয়ের ছবি অতুলনীয়। মাদলের সঙ্গে আদিবাসী নাচের তালে চারদিক ভরে উঠবে ভোরের আলো। এখানেও থাকবে ফুড ফেস্টিভ্যাল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনভর কাটানোর আয়োজন থাকবে ভোরের আলোয়। হিমালয়ান হসপিটালিটির তরফে উদ্যোক্তারা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তাঁরা জানিয়েছেন, পর্যটন, হিমালয়ের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক দিকটাও কার্নিভালে খেয়াল রাখা হচ্ছে। করোনার সরকারি সব নিয়ম মেনেই অনুষ্ঠানগুলি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Carnival Himalaya Travel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE