রাজ্যের চার মন্ত্রী-নেতাকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে নিজাম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভে তৃণমূল সমর্থকেরা। —ফাইল চিত্র।
নারদ মামলায় রাজ্যের চার মন্ত্রী-নেতাকে গ্রেফতারের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘হুমকি’ দেওয়া এবং ‘প্রভাব’ খাটানোর অভিযোগ করেছিল সিবিআই। ওই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলে সিবিআই। গত ১৭ মে, সেই ধরপাকড়ের দিনে নিজ়াম প্যালেসে মুখ্যমন্ত্রী কী কী করেছিলেন, তার সবিস্তার বিবরণ শুক্রবার হলফনামার আকারে কলকাতা হাই কোর্টে পেশ করেছে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। হলফনামায় তাদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী সে-দিন ছ’ঘণ্টা নিজ়াম প্যালেসের ভিতরে ছিলেন এবং ধৃত মন্ত্রী-নেতাদের আদালতে নিয়ে যেতে বাধা দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সম্প্রতি হাই কোর্টে যে-হলফনামা পেশ করা হয়েছে, তারই পাল্টা হলফনামা পেশ করেছেন সিবিআইয়ের ডিএসপি সত্যেন্দ্র কুমার। তবে হলফনামায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সবিস্তার বক্তব্য পেশ করা হলেও তিনি নিজ়াম প্যালেসে ঢুকছেন— এটুকুই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভিতরে কোনও অনৈতিক আচরণ করে থাকলে তার প্রমাণ কেন সংগ্রহ করা হয়নি? এমনকি তিনি বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, হলফনামায় তেমনও প্রমাণ দিতে পারেনি সিবিআই।
সিবিআইয়ের ওই হলফনামায় বলা হয়েছে, চার মন্ত্রী-নেতাকে গ্রেফতার করার পরে তাঁদের নিজ়াম প্যালেসের ১৫তলার একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় (তবে ধৃতদের আইনজীবীদের দাবি, সিবিআই চার জনকে নিজ়াম প্যালেসে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মেমোয় দেখিয়েছে।)। মুখ্যমন্ত্রী সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নিজ়াম প্যালেসে ঢোকেন। তিনি ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন অথবা তাঁকে অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীকেও গ্রেফতার করতে বলেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ছ’ঘণ্টা ভিতরে বসে ছিলেন। তিনি ধৃতদের আদালতে নিয়ে যেতে বাধা দেন এবং তার পরেই তারা (সিবিআই) হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। হলফনামায় এটাও বলা হয়েছে যে, নিজ়াম প্যালেসের মূল গেটে জনসাধারণ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল এবং তারা যে-কোনও সময়ে পিছনের গেটেও উপস্থিত হতে পারে— এই ভয়েই সিবিআই সে-দিন ধৃতদের আদালতে নিয়ে যেতে পারেনি।
সিবিআইয়ের ওই হলফনামায় আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূলের সাংসদ-আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কেও নানান অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের সমর্থনে কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সংবাদমাধ্যম থেকে সংগৃহীত নথির উল্লেখও করেছে সিবিআই। তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, কল্যাণবাবু সে-দিন আইনজীবী হিসেবেই আদালতে উপস্থিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই যে-নথির কথা বলছে, তাতে মূলত বলা হয়েছে, তিনি সংবাদমাধ্যমে গ্রেফতারের বিরোধিতা করে বক্তব্য পেশ করেছেন। ধৃতদের আইনজীবী হিসেবে সেই অধিকার তাঁর আছে বলেই দাবি তৃণমূল শিবিরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy