E-Paper

পুলিশের গাফিলতিতে কেন ‘নিস্পৃহ’ সিবিআই

এ বার নিহত ডাক্তার ছাত্রীর পরিবারের তরফে আইনজীবীরা ফের কলকাতা পুলিশের অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে তদন্তে সিবিআইয়ের ‘নিস্পৃহতায়’ সরব হয়েছেন।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-পড়ুয়া খুন ও ধর্ষণের তদন্তে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের ভূমিকা কী ছিল, তা সিবিআইয়ের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বলে শিয়ালদহ আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অরিজিৎ মণ্ডল জানিয়েছেন। গত জানুয়ারিতে নিম্ন আদালতের রায়ে আর জি কর-কাণ্ডে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছিল। তখনও শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের পর্যবেক্ষণে কলকাতা পুলিশের কয়েক জন অফিসারের গাফিলতির দিকটি উঠে আসে। সিবিআইয়ের বিষয়টি দেখা উচিত ছিল বলে সেই বিচারক অনির্বাণ দাস মন্তব্যও করেন।

এ বার নিহত ডাক্তার ছাত্রীর পরিবারের তরফে আইনজীবীরা ফের কলকাতা পুলিশের অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে তদন্তে সিবিআইয়ের ‘নিস্পৃহতায়’ সরব হয়েছেন। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকের রায়ে ওই অফিসারদের গাফিলতির দিকটি উঠে এলেও সিবিআই তদন্তে তাপ-উত্তাপ কেন দেখা যায়নি? আইনজীবীরা শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অরিজিৎ মণ্ডলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।

শুক্রবার তদন্তের গতিপ্রকৃতির রিপোর্ট আদালতে জানায় সিবিআই। সে-দিনই মামলার শুনানির পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অরিজিৎ মণ্ডল তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘সিবিআই দেশের সব থেকে শক্তিশালী তদন্তকারী সংস্থা। কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের তদন্তে গাফিলতির বিষয়টি সিবিআইয়ের ফের খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এবং তা অনুসন্ধানের পুরো ক্ষমতা সিবিআইয়ের রয়েছে। এর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের কর্তারাও ওই নিয়ে তদন্ত করতে পারেন।’’ তার আগের শুনানিতেই ওই অফিসারদের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কলকাতা পুলিশের নগরপালকে সুপারিশ করেছিলেন তিনি। আদালত সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের তরফে কোনও রিপোর্ট আদালতে জমা পড়েনি।

আদালত সূত্রে খবর, নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার মা গোপন জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক বলেও আইনজীবীদের তরফে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি তদন্তকারী সংস্থার বিবেচ্য বলেই মত প্রকাশ করেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। সিবিআইয়ের আইনজীবীদের মতে, নির্যাতিতার মা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নন। তিনি যা শুনেছেন (হিয়ারসে এভিডেন্স), তার ভিত্তিতে গোপন জবানবন্দি দিতে চান। এই বয়ান জোরদার আদালত গ্রাহ্য প্রমাণ হিসেবে পেশ করা যাবে না। তাই ওঁর গোপন জবানবন্দি গ্রহণের প্রয়োজন থাকছে না।

আদালত সূত্রে খবর, নিহত ডাক্তার ছাত্রীর ময়না তদন্তের কয়েকটি ছবিও সিবিআইয়ের তরফে অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালতে পেশ করা হয়েছিল। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে সিবিআইয়ের কাছে ওই সব ছবি চাওয়া হয়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেও বিচারক অরিজিৎ মণ্ডলের পর্যবেক্ষণ, মামলার কেস ডায়েরিতে ওই সব ছবি রয়েছে। একটি কেস ডায়েরি মামলার সূত্রে হাই কোর্টে জমা রয়েছে। আর একটি কেস ডায়েরি সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের কাছে রয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে। এই মুহূর্তে আদালতের পক্ষে ওই ছবি পরিবারকে দেওয়ার সুযোগ নেই।

তবে মামলার বিচার যে আদালতে হয়েছিল সেখান থেকে মামলা সংক্রান্ত নথির ‘সার্টিফায়েড কপি’ নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীরা সংগ্রহ করতে পারবেন বলে বিচারক অরিজিৎ মণ্ডল জানান। আগামী জানুয়ারির শুনানিতে বিচারক সিবিআইকে আদালতে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RG Kar Medical College and Hospital Incident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy