হাসপাতালে মদন মিত্র।—ফাইল চিত্র।
হাইকোর্টের নির্দেশে হাসপাতালেই মদন মিত্রের উপরে নজরদারি শুরু করল সিবিআই। আলিপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মদনবাবু। শুক্রবার সকালে ওই হাসপাতালে চার জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশও। লালবাজার সূত্রের খবর, হাসপাতালে রয়েছেন সিবিআইয়ের দুই কর্মীও।
সারদা কাণ্ডে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মদন মিত্রকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ৩২৪ দিন হাজতবাস (যদিও এর বেশির ভাগটাই কেটেছে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে) করার পর আলিপুর জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক পার্থপ্রতিম দাস গত ৩১ অক্টোবর মদনবাবুকে জামিনে মুক্তি দেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।
সিবিআইয়ের আর্জির প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি মির দারা সিকোর অবকাশকালীন বেঞ্চ মদনবাবুর জামিনের নির্দেশ খারিজ করেনি। তবে আদালত জানিয়েছে, মদনবাবুকে পুলিশি নজরদারিতে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হবে। চিকিৎসার প্রয়োজন বা জেরার জন্য সিবিআইয়ের কাছে হাজির হওয়া ছাড়া তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। মামলার সাক্ষী এবং তথ্যপ্রমাণের সুরক্ষার জন্য সিবিআই আলাদা ভাবে নজরদারির ব্যবস্থাও করতে পারবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, হাসপাতালে নজরদারি করতে গেলে যে পরিমাণ লোকবল দরকার, তা তদন্তকারী সংস্থাটির হাতে নেই। সে জন্যই লালবাজারের কাছে পুলিশি সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এ দিন লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠিয়ে সিবিআই যথাযথ ব্যবস্থার আয়োজন করতে বলেছে। আমরা অবশ্য চিঠি পাওয়ার আগে থেকেই হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ ওই পুলিশকর্তা জানান, হাসপাতাল চত্বরে নজরদারির জন্য তিন শিফটে উর্দিপরিহিত ও সাদা পোশাক মিলিয়ে ১৫-১৮ জন
পুলিশ থাকবে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ মদনবাবুর কেবিনের বাইরে চার জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দুপুরে কেবিনের বাইরে এক জন পুলিশকর্মীকে দাঁড় করিয়ে বাকি তিন জন নীচে নেমে আসেন। এ দিন রাত পর্যন্ত মদনবাবুর সঙ্গে কেউ দেখা করতে যাননি।
লালবাজারের একাংশ মনে করছেন, এসএসকেএম হাসপাতালে থাকার সময় মদনবাবুর কেবিনে অনেক বাইরের লোক যাতায়াত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তার ফলেই এ বার মদনবাবুর কেবিনে কে কে আসছে, সে ব্যাপারে নজরদারি করতে বলেছে আদালত। পুলিশের একাংশের অভিমত, লালবাজার যে হেতু রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে এবং মদনবাবু রাজ্যের মন্ত্রী, তাই গোটা ব্যবস্থার উপরে পুলিশের পাশাপাশি সিবিআই নিজেদের নজরদারিও রেখেছে। এ দিন দুপুর থেকেই ওই হাসপাতালে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। হাসপাতালে যাতায়াত করা লোকজনকে রীতিমতো কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে পুলিশকে।
এ দিনই অর্থলগ্নি সংস্থা ‘আসদা’-র চার কর্তাকে তিন দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ব্যারাকপুর আদালতের অতিরিক্ত মু্খ্য বিচারক। ধৃত চার কর্তার ৭ দিনের হেফাজতের আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy