শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং অশোক সাহা। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসির প্রাক্তন দুই উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং অশোক সাহার সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল আরও দু’দিন। সোমবার তাঁদের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হলে এই নির্দেশ দেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক শুভার্থী সরকার।
শুনানিতে শান্তিপ্রসাদ সিন্হার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত এবং দীপঙ্কর বসু জানান, এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে আগেই হাই কোর্টের নির্দেশে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে একটি কমিটি তদন্ত করেছিল। সে ক্ষেত্রে তিনি প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতি সংক্রান্ত সব তথ্যই যদি বাগ কমিটির কাছ থেকে সিবিআই পেয়ে থাকে, তবে নতুন করে সিবিআই হেফাজতে তাঁর মক্কেলকে রাখার প্রয়োজন পড়ছে কেন? এর আগে সিবিআই যতবার ডেকেছে, ততবার তাঁর মক্কেল হাজিরা দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী।
শান্তিপ্রসাদ সিন্হার জামিনের পক্ষে সওয়াল করে তিনি দাবি করেন, সিবিআই তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যে, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। পরে মত বদলে সিবিআই জানায়, অভিযুক্তের সই নিতে হবে। তাই তাঁদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে, শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং অশোক সাহা একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন, এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁদের আরও একবার নিজেদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। কিন্তু তার পাল্টা শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী জানান, এটি একেবারেই শিশুসুলভ একটি যুক্তি। এই যুক্তিতে কাউকে হেফাজতে নেওয়া যায় না বলেও দাবি করেন তিনি। আদালতে শান্তিপ্রসাদ সিন্হার আইনজীবী অভিযোগ তোলেন যে, সিবিআই অবান্তর যুক্তি দিয়ে তাঁর মক্কেলকে আটকে রাখতে চাইছে। এভাবে এই মামলাটিকে দীর্ঘদিন টেনে নিয়ে গিয়ে অন্যান্য অভিযুক্তদের ছাড় পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী ডিএল পান্ডে আদালতে শান্তিপ্রসাদ এবং অশোকের আবারও দু’দিনের সিবিআই হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানান, বাগ কমিটির রিপোর্টকে প্রামান্য হিসাবে ধরলে, সেখানেও দুর্নীতির ‘মূল চক্রী’ হিসাবে শান্তিপ্রসাদের নাম রয়েছে। এই দু’জনকে নতুন করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার যুক্তি হিসাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তাদের হেফাজতে নেওয়ার আগেই তাঁরা সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। তথ্য বিকৃত করার চেষ্টা করেছেন। তাই বৃহত্তর এই ষড়যন্ত্রের কিনারা করার জন্যই তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন বলে আদালতে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। তিনি আরও দাবি করেন, এখন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হলে তাঁরা তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য দু’জনের সামনে হাজির করলেও, তাঁরা সেগুলি অস্বীকার করেছেন বলে দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীর।
পাল্টা শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত এবং দীপঙ্কর বসু আদালতে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই হেফাজতে তাঁদের মক্কেল ১২ দিন থাকার পরও, তদন্ত প্রভাবিত করার যুক্তি আসছে কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy