Advertisement
০৩ মে ২০২৪
State News

এ ভাবে কেন্দ্রীয় দল কাম্য নয়: মোদীকে চিঠি লিখে প্রোটোকল মনে করালেন মমতা

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় যে সৌজন্য জরুরি, তা যে তিনিও কেন্দ্রের কাছ থেকে আশা করেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজের চিঠিতে সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ২১:০১
Share: Save:

প্রশ্ন তুলেছিলেন আগেই। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে আসছে, সে কথা অমিত শাহ এ দিন তাঁকে জানানোর আগেই কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেছেন— চিঠিতে এ কথা লিখে নিজের বিরক্তি মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে কোনও অসৌজন্যমূলক কথা মুখ্যমন্ত্রী লেখেননি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় যে সৌজন্য জরুরি, তা যে তিনিও কেন্দ্রের কাছ থেকে আশা করেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজের চিঠিতে সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন।

মোদীকে লেখা চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন যে, রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল আসার কথা সোমবার দুপুর একটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে ফোনে জানান। কিন্তু সকাল ১০টা ১০ মিনিটেই যে একটি বিশেষ কার্গো উড়ানে কেন্দ্রীয় দল কলকাতায় পৌঁছেছে, সে কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, এই ভাবে আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দল পাঠানো প্রোটোকলের বাইরে।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন আসার আগে অবশ্য রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে কেন্দ্রের চিঠি পৌঁছেছিল। তবে সে চিঠিও যে কলকাতায় কেন্দ্রীয় দল পৌঁছনোর মাত্র আধ ঘণ্টা আগে পৌঁছেছিল, মোদীকে লেখা চিঠিতে সে কথাও বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন মমতা।

আরও পড়ুন: সঙ্গত কারণ না দেখিয়ে রাজ্যে কেন কেন্দ্রীয় দল? প্রশ্ন তুললেন মমতা

করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল পশ্চিমবঙ্গে আসছে, এ কথা জানিয়ে যে চিঠি মুখ্যসচিবকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্র, সেই চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, রাজ্য সরকার যেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের পরিবহণ তথা যাতায়াত সংক্রান্ত সহায়তা দেয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় দল কলকাতায় পৌঁছনোর পরে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ না করে বিএসএফ এবং এসএসবির মতো কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের সহায়তায় রাজ্যের নানা প্রান্তে যায়। প্রধানমন্ত্রীকে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু যাতায়াতের জন্য সহায়তা চাওয়াই নয়, আগে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি জেনে নিয়ে তার পর পরিদর্শনে যাওয়াটাই যে প্রতিষ্ঠিত রীতি, সে কথা মোদীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: মাথাপিছু ১ হাজার টাকা, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘স্নেহের পরশ’ রাজ্যের

‘‘কেন্দ্রের নির্দেশে (চিঠিতে) লেখা হয়েছে যে, অনেক জায়গায় লকডাউন ভাঙা হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলায় পরিস্থিতি গুরুতর। এই পর্যবেক্ষণ তথ্যভিত্তিক নয় এবং এই দাবির কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই,’’— প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে কেন্দ্রের কাছ থেকে যে চিঠি এসেছিল রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে, তাতে ৭টি জেলার পরিস্থিতি গুরুতর বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। জেলাগুলি সম্পর্কে কেন্দ্র যা লিখেছে, তা-ও তথ্যভিত্তিক নয় বলে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই জেলাগুলির মধ্যে দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ির নাম রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন যে, কালিম্পং থেকে শেষ সংক্রমণের খবর এসেছে ২ এপ্রিল, জলপাইগুড়ি থেকে এসেছে ৪ এপ্রিল এবং দার্জিলিং থেকে শেষ সংক্রমণের খবর এসেছে গত ১৬ এপ্রিল। এই তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘এটা দেখিয়ে দিচ্ছে, যে রকম একতরফা ভাবে জেলাগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যে পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে, তা কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয় এবং দুর্ভাগ্যজনক।’’

পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে লকডাউন অত্যন্ত কঠোর ভাবে রূপায়ণ করছে এবং কেন্দ্রের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগও রেখে চলেছে, সে কথা প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে কেন্দ্রেরও আগে লকডাউন ঘোষণা করেছে, সে কথাও চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন। যে পরিস্থিতি এখন চলছে এবং কেন্দ্র ও রাজ্য যে ভাবে হাত মিলিয়ে কাজ করছে, তাতে কেন্দ্রের তরফ থেকে এই রকম একতরফা পদক্ষেপ কাম্য নয়, সে কথা প্রধানমন্ত্রীর বোঝা উচিত— লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE