নানা অনিয়ম উঠেছে একশো দিনের কাজে। ফাইল চিত্র।
একশো দিনের কাজ পরিদর্শনে সম্প্রতি বাংলায় এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। দিল্লি ফিরে জমা দেওয়া রিপোর্টে তাদের পর্যবেক্ষণ, এ রাজ্যে নানা অনিয়ম রয়েছে। কোথাও একশো দিনের কাজ করছে শিশুশ্রমিক। কোথাও খাতায়-কলমে প্রকল্পের কাজ হয়ে গেলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্যে এক চিঠি পাঠিয়ে ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ (এটিআর) চেয়েছে। তা পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় দলের এই পরিদর্শন হয়েছে দেশ জুড়েই, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যের ১১৫টি জেলায়। এই দফায় রাজ্যের ১৫টি জেলায় পরিদর্শন হয়েছে। প্রত্যেক জেলার জন্য পৃথক দল। মন্ত্রকের নির্দেশই ছিল, জেলায় এসে অন্তত ২টি ব্লকের ৪ থেকে ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে পঞ্চায়েত-পিছু অন্তত ৬টি প্রকল্প পরিদর্শন করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। সেই পরিদর্শনে নানা অনিয়মই নজরে এসেছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের সামজিয়ায় ক্ষুদ্রসেচ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দলটি দেখেছে, শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছে একটি ১৫ বছরের ছেলে। সে-ও শ্রমিকের কাজ করছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের দু’টি প্রকল্পে এমআইএস অনুযায়ী একটির কাজ চলছে, আর একটি শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, পরিদর্শনে দেখা গিয়েছে কোনওটিই হয়নি। নিয়মানুযায়ী, প্রকল্পের সামনে বোর্ড থাকার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় দলের পর্যবেক্ষণ, বাংলায় এই ‘সিটিজ়েন ইনফর্মেশন বোর্ড’ (সিআইবি) রয়েছে ৭৫ শতাংশ প্রকল্প এলাকায়। ২৫ শতাংশ প্রকল্প এলাকায় বোর্ড নেই। পশ্চিম বর্ধমানে অনেক কাজের রেকর্ড, ফাইল ঠিকঠাক দেখভাল করা হয়নি। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় জবকার্ড, মাস্টার রোলে গরমিল। দক্ষিণ দিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান প্রভৃতি জেলায় নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে মজুরি পেয়েছেন শ্রমিকেরা। বিভিন্ন জেলায় কিছু প্রকল্পের মাস্টার রোলই মেলেনি।
উল্লেখ্য, একশো দিনের কাজের টাকা না পেলে দিল্লি ঘেরাও হবে— ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরপরই এই পরিদর্শন। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক আশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘গরিব মানুষকে ভোগাতে চাইছে কেন্দ্র। টাকা না দিয়ে শুধু বাংলাকেই বঞ্চনা করা হচ্ছে।’’ রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি শমিত দাশ পাল্টা বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজে কেন্দ্র যে টাকা পাঠাচ্ছিল, তা লুট হয়ে যাচ্ছিল। দুর্নীতি যে হয়েছে, তা তো পরিদর্শনেও দেখা গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy