প্রতীকী চিত্র
কেন্দ্রীয় ভাবে অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করার সময় থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রার্থীরা তেমন ভাবে সুযোগ পাচ্ছেন না বলে লাগাতার অভিযোগ উঠছে। এই অবস্থায় ডাক্তারি, সেই সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিংয়েরও সর্বভারতীয় প্রবেশিকায় কী ভাবে সফল হওয়া যায়, বিনামূল্যে তার তালিম দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এতে একসঙ্গে দু’টি কাজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রথমত, ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পাওয়ার জন্য নিখরচায় অনেক নির্দিষ্ট ভাবে প্রস্তুতি চালানোর সুযোগ পাবেন
ছাত্রছাত্রীরা। দ্বিতীয়ত, অনেকাংশে বন্ধ হবে বেসরকারি কোচিং সেন্টারগুলির দাপট।
পরীক্ষার্থীদের বক্তব্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) এবং ডাক্তারি পড়ার জন্য নিট— এই দুই সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা খুবই কঠিন। এই পরীক্ষাগুলিতে সফল হতে পড়ুয়ারা মাসের পর মাস বিভিন্ন বেসরকারি কোচিং সেন্টারে মোটা টাকার বিনিময়ে তালিম নেন। আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনেক পড়ুয়াও ধারকর্জ করে এমন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। শিক্ষা শিবিরের মতে, সরকারি কোচিং সেন্টার চালু হলে প্রার্থীরা উপকৃত হবেন। রমরমা কমবে বেসরকারি কোচিং সেন্টারের। নবগঠিত কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি আগামী বছর থেকে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা তাদের ২৬৯৭টি সেন্টারে বিনামূল্যে এই তালিমের ব্যবস্থা করছে।
শিবপুর আইআইইএসটি-র রেজিস্ট্রার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিবারের আয় কম হলে পড়ুয়াদের টিউশন ফি মকুবের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রবেশিকা পরীক্ষার যা মান, তাতে অনেক পড়ুয়া প্রবেশিকাতেই এঁটে ওঠেন না। তাই ভর্তি
হওয়া অনেকের কাছেই প্রায়
অসম্ভব। তালিমের কেন্দ্রীয় সরকারি ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়ে বিমানবাবু বলেন, ‘‘দেখতে হবে, কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির শাখা সেন্টারগুলো কোথায় তৈরি হচ্ছে। শুধু শহরে সরকারি কোচিং সেন্টার খোলা হলে গ্রামের পড়ুয়ারা তার সুবিধা পাবে না। তাদের জন্য গ্রামেও এই ধরনের সেন্টার গড়ে তোলা প্রয়োজন।’’ বিনামূল্যে সরকারি কোচিং সেন্টার খোলার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যও। তিনি জানান, এই সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য বেসরকারি কোচিং সেন্টারগুলি যে-টাকা নেয়, অনেক পড়ুয়ার পক্ষে তা দেওয়া সত্যিই অসম্ভব। তাই কেন্দ্রীয় উদ্যোগে কোচিং দেওয়ার ব্যবস্থা হলে পড়ুয়ারা খুবই উপকৃত হবেন।
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ দত্ত অবশ্য এমন উদ্যোগের সাফল্য নিয়ে বেশ সংশয়ী। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি কোচিং সেন্টারের তালিমের মান কেমন হবে, সেটা আগে দেখা প্রয়োজন। তালিমের মান যদি ভাল না-হয়, তা হলে কিন্তু এমন উদ্যোগ পড়ুয়াদের খুব একটা কাজে লাগবে না।’’ তালিম নিতে গিয়ে পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়ার অভ্যাসটাই যাতে চলে না-যায়, সেটাও দেখা দরকার বলে মন্তব্য করেন সিদ্ধার্থবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy