রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি নিয়ে নবান্নকে সতর্ক করা হয়েছিল বলে কোর্টে দাবি করল কেন্দ্র। মুর্শিদাবাদের অশান্তি সংক্রান্ত মামলায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে কেন্দ্রের কৌঁসুলি জানান, ১৫টি জায়গায় অশান্তি হতে পারে বলে ১৮ এপ্রিল রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের ডিজিকে ওই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল। এ দিন আরও জানানো হয়েছে যে আদালত অনুমতি দিলে এনআইএ অশান্তির ঘটনার তদন্তভার নিতে প্রস্তুত। এ দিন আদালত অবশ্য তদন্তভার নিয়ে কিছু জানায়নি। তবে মুর্শিদাবাদে আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। ৩১ জুলাই পরবর্তী শুনানি।
এ দিন বিচারপতি সেনের পর্যবেক্ষণ, প্রতি জেলায় পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নেই। মুর্শিদাবাদেও সেই অবস্থা। পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী থাকলে হয়তো পরিস্থিতি আরও আগেই নিয়ন্ত্রণ করা যেত। পুলিশে নিয়োগে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেছে কোর্ট। যদিও রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোর্টে দাবি করেন যে গোটা দেশেই নিরাপত্তাবাহিনীতে কর্মীর ঘাটতি আছে। ঘাটতি না থাকলে পহেলগামের ঘটনা হত না। তা শুনে বিচারপতি সেন বলেন, “ঠিক, কিন্তু আপাতত এখানের কথা চিন্তা করা যাক।” তাঁর পর্যবেক্ষণ, প্রতি জায়গায় ন্যূনতম বাহিনী থাকা প্রয়োজন।
ক্ষতিপূরণ নিয়েও এ দিন কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য। এ দিন কল্যাণ দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। যদিও ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, “ক্ষতিপূরণের যে প্রকল্প আছে, সেটা মেনে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য? আপনারা যা পর্যাপ্ত বলে মনে করছেন সেটা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত বলে না-ও মনে হতে পারে।” তবে বিচারপতি সেন এ দিন এ-ও জানিয়েছেন যে আদালতের সামনে আপাতত যা রিপোর্ট এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে যে প্রশাসন ভাল কাজ করেছে।
আজ বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ও লিগাল সার্ভিস অথরিটি তাদের রিপোর্টে পুলিশের অপদার্থতা ও তাদের প্রতি মানুষের অনাস্থার কথা জানিয়েছে। ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রেও একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে চেক দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে মিথ্যা রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তা লিখিত বয়ান আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)