Advertisement
E-Paper

ফুটপাত নীতি ঠিক করতে রাজ্যগুলিকে চিঠি কেন্দ্রের, নবান্নে পৌঁছেছে মোদী সরকারের নির্দেশিকা

বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফুটপাতের সঠিক পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। বাস্তবে বহু শহরেই ফুটপাত দখল হয়ে থাকে হকার, গাড়ি পার্কিং বা নির্মাণসামগ্রীর স্তূপে। পথচারীদের কোনও সুনির্দিষ্ট চলাচলের জায়গা না থাকায় সড়কে নেমে চলতে হয়, যার ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহু গুণ বেড়ে যায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১২:৪৮
Centre\\\'s send letter to states seeking input on Footpath policy guidelines

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠাল কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি সরকারি চিঠি, যেখানে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘ফুটপাত নীতি’ থাকলে তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। আর যদি এমন কোনও নীতি এখনও পর্যন্ত গৃহীত না হয়ে থাকে, তা-ও জানিয়ে দিতে হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের দফতরেও পৌঁছে গিয়েছে এই নির্দেশিকা। নবান্নে বিষয়টি ইতিমধ্যেই গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে পাঠানো চিঠিতে শুধু ফুটপাত নীতিই নয়, রাজ্যে বর্তমানে কতগুলি ফুটওভার ব্রিজ এবং কতগুলি সাবওয়ে রয়েছে, সেই পরিসংখ্যানও চাওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফুটপাতের সঠিক পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। বাস্তবে বহু শহরেই ফুটপাত দখল হয়ে থাকে হকার, গাড়ি পার্কিং বা নির্মাণসামগ্রীর স্তূপে। পথচারীদের কোনও সুনির্দিষ্ট চলাচলের জায়গা না থাকায় সড়কে নেমে চলতে হয়, যার ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহু গুণ বেড়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্ট ইতিপূর্বে একাধিক বার বলেছে, পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাজ্য ও পুরসংস্থাগুলির দায়বদ্ধতার মধ্যেই পড়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই চিঠির পেছনে সুপ্রিম কোর্টেরই একটি সাম্প্রতিক নির্দেশ রয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।

চিঠিতে রাজ্যগুলিকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তাদের ফুটপাত নীতি থাকলে তার অনুলিপি পাঠাতে হবে। যদি না থাকে, তবে সেটাও জানিয়ে দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে সেই ধরনের নীতি গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে কিনা, তা-ও উল্লেখ করতে হবে। পাশাপাশি, শহর ও মফস্‌সল এলাকায় কতগুলি ফুটওভার ব্রিজ ও সাবওয়ে আছে, তাদের অবস্থান ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত তথ্যও আলাদা করে জানতে চাওয়া হয়েছে।

পরিবহণ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কারণ, ভারতে প্রতি দিনই বহু মানুষ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বা আহত হন, যার বড় একটা অংশ পথচারী। এই পরিকাঠামোগুলির অভাব এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না-থাকাও দায়ী। এ দিকে, নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইতিমধ্যেই রাজ্য পরিবহণ দফতর, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং কলকাতা ও অন্যান্য শহরের পুরসভাগুলিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কত সংখ্যক ফুটপাত বর্তমানে রয়েছে, তার কতটা ব্যবহারযোগ্য এবং ভবিষ্যতে উন্নয়ন পরিকল্পনা কী হতে পারে— তা-ও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।

এই চিঠির প্রেক্ষিতে রাজ্য এ বার ফুটপাত ও পথচারী পরিকাঠামো নিয়ে আরও সুদৃঢ় নীতি প্রণয়নের পথে এগোবে কি না, সেটাই এখন দেখার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধরনের উদ্যোগ দেশের শহরগুলিকে আরও পথচারী-বান্ধব করে তুলতে সাহায্য করবে বলেই মনে করছেন পরিকল্পনাবিদেরা। তবে প্রশাসনিক মহলের আরও একটি অংশ মনে করছে, দেশের বিভিন্ন শহর ও মফস্‌সল এলাকায় যে ভাবে দিনে দিনে হকারদের নিয়ে নিত্যনতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেই বিষয়টির দিকেও নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক মন্ত্রকের। তাই ফুটপাত নীতি তৈরির পাশাপাশি হকারদের নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। সে ক্ষেত্রে ফুটপাত নীতি হচ্ছে তার প্রথম পদক্ষেপ।

Footpath Encroachment WB State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy