Advertisement
E-Paper

স্বাদে বদল, কদর রেলের খাবারের

রেল জানাচ্ছে, আগে প্রাতরাশে কাঁচা পাউরুটির সঙ্গে মাখনের একটি কিউব দেওয়া হতো। এখন পাউরুটি টোস্ট দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গের ওমলেট ঠিকঠাক। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইগুলিও সুন্দর করে ভাজা। দুপুরের মেনু পরিবর্তন করে মরসুমি তরিতরকারি দেওয়া হচ্ছে।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৩

সামান্য কিছু রদবদল। আর তাতেই সাফল্য আসতে শুরু করেছে। রেলের দাবি অন্তত তেমনটাই।

বদলটা কীসে?

বদল রান্নায়, স্বাদে। বদল যত্নে, পরিষেবায়। পরিচ্ছন্নতাতেও।

কতটা বদলেছে খাবারের মান?

রেল জানাচ্ছে, আগে প্রাতরাশে কাঁচা পাউরুটির সঙ্গে মাখনের একটি কিউব দেওয়া হতো। এখন পাউরুটি টোস্ট দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গের ওমলেট ঠিকঠাক। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইগুলিও সুন্দর করে ভাজা। দুপুরের মেনু পরিবর্তন করে মরসুমি তরিতরকারি দেওয়া হচ্ছে। মশলা পাল্টে চিকেন-পদের স্বাদ বাড়ানো হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে নামী সংস্থার দই আর আইসক্রিম।

কয়েক মাস আগেও খাবারের মান নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে পরের পর অভিযোগ আসতে থাকায় জেরবার হয়ে যাচ্ছিলেন রেলকর্তারা। যাত্রীদের প্রশ্ন ছিল, রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো প্রিমিয়াম ট্রেনের খাবারও কী করে এত অখাদ্য হতে পারে? বদনাম ঘোচাতে নিয়ম বদল করে রেল। তাতেই ফল মিলতে শুরু করেছে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা।

কী রকম?

রেলকর্তারা জানান, নিয়ম বদল করে কিছু দিন আগে জানানো হয়, প্রিমিয়াম ট্রেনের সংরক্ষিত আসনের টিকিটে আর খাবারের দাম কেটে নেওয়া হবে না। রেলের খাবার নেওয়ার বিষয়টা হবে ‘ঐচ্ছিক’। অর্থাৎ যাত্রীরা রেলের খাবার খেতে বাধ্য নন। কেউ রেলের খাবার চাইলে তবেই তাঁকে তা দেওয়া হবে।

পরিবর্তনের ফলে কাজ হয়েছে মূলত দু’ভাবে। রেলের দিক থেকে তৎপরতা আর খাবার সরবরাহকারী সংস্থার সতর্ক পরিষেবা। প্রিমিয়াম ট্রেনে খাবার সরবরাহ করে বিভিন্ন বেসরকারি কেটারিং সংস্থা। তারা মান বজায় রেখে খাবার দিচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য চলন্ত ট্রেনে আচমকা পরিদর্শন-নজরদারি চালাচ্ছেন রেলের অফিসারেরা। খাবারদাবারের মান, পরিবেশন, পরিচ্ছন্নতায় কোনও রকম ঘাটতি দেখলেই কেটারিং সংস্থার জরিমানা করা হচ্ছে। এ ভাবে গত আট মাসে শুধু দক্ষিণ-পূর্ব জোনেই আদায় হয়েছে ১৮ লক্ষ টাকা।

এটা যদি রেলের তৎপরতা হয়, হুঁশিয়ার হয়ে গিয়েছেন খাবার সরবরাহকারীরাও। জরিমানার ভয়ে নিচু মানের খাবার দিতে আর সাহস করছে না কোনও কেটারিং সংস্থা। তাতে যাত্রীরাও খুশি। রেল সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, কড়া নজরদারির ফলে খাবারের মান ঠিক থাকায় এখন বেশির ভাগ যাত্রী রেলের খাবারই পছন্দ করছেন। যেমন, নভেম্বরে হাওড়া-পুণে দুরন্ত এক্সপ্রেসের ৪৩৫ জন যাত্রী টিকিট কাটার সময়ে ট্রেনের খাবার নিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু জানুয়ারির জন্য যে-বুকিং হয়েছে, তাতে খাবার নিতে চাননি মাত্র ৬২ জন। অর্থাৎ নিয়ম বদলের ফলে খাবার প্রত্যাখ্যানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেক বেশি যাত্রী আসন সংরক্ষণের সময়েই খাবার নিয়েছেন। খাবার ও পরিষেবার মান উন্নত হওয়ায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি রেলকর্তাদের।

‘‘সব প্রিমিয়াম ট্রেনেই এখন তৈরি খাবার দেওয়া হয়। হিসেব বলছে, এখন যাত্রীরা এই খাবারই ভালবেসে খাচ্ছেন। শীঘ্রই খাবারের মান ও স্বাদে আরও পরিবর্তন আসছে, বলেন ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র পূর্বাঞ্চলের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র।

তবে অনেকের বক্তব্য, প্রিমিয়াম ট্রেন বেশির ভাগ স্টেশনেই দাঁড়ায় না। যেখানে দাঁড়ায়, মাত্র মিনিট পাঁচেকের জন্য। ওই সামান্য সময়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে খাবার কেনা সম্ভব নয়। তাই রেলের খাবারের উপরেই ভরসা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।

Food Indian Railway Quality Taste
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy