স্ত্রীর উপরে সন্দেহের ফলে তাঁর মোবাইলে ‘নজরদার’ সফ্টওয়্যার ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন স্বামী। সেই অপরাধে হাওড়ার ওই যুবক স্বামীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করল রাজ্য সাইবার অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল। জরিমানার এই টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে তুলে দিতে হবে স্ত্রীর হাতে।
এই রায়ের পরে সাইবার দুনিয়ায় ব্যক্তিগত জীবনের পরিধি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বামী-স্ত্রী হলেও অনুমতি ছাড়া সাইবার দুনিয়ায় একে-অন্যের প্রোফাইলে ঢুকতে পারেন না কেউ। অনুমতি ছাড়া স্বামী স্ত্রীর প্রোফাইলে বা স্ত্রী স্বামীর প্রোফাইলে ঢুকলে সেটাকে ‘হ্যাকিং’ বলেই গণ্য করা হবে। হাওড়ার ওই যুবকের স্ত্রীর আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘স্বামী হলেই কেউ নিজের স্ত্রীর কম্পিউটার বা মোবাইলের পাসওয়ার্ড চুরি করতে পারেন না। এই ধরনের কাজ যে অপরাধ, সাইবার আদালতের রায়েও সেটাও পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’’
এ দিন রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পরে ওই যুবতীর বক্তব্য, ‘‘আমার চরিত্রে কালি ছিটোতে হ্যাক করা হয়েছিল। সেটা প্রমাণ করতেই এত দিন লড়ছিলাম। আদালত আর আমার কৌঁসুলির কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’ বিভাসবাবুর মতে, এই রায় সাইবার অপরাধের মামলায় এক নতুন দিক খুলে দিল। যাঁরা এই ধরনের অপরাধের শিকার, এ বার থেকে তাঁরা উপযুক্ত বিচার পাবেন বলেই আশা করছেন ওই আইনজীবী।
সাইবার আদালতে এই মামলার সূচনা ঠিক কী ভাবে?
কয়েক বছর আগে হাওড়া-শিবপুরের এক যুবতীর সঙ্গে সালকিয়ার ওই যুবকের বিয়ে হয়। বনিবনা না-হওয়ায় বাপের বাড়িতে ফিরে যান ওই যুবতী। বিবাহ-বিচ্ছেদের চিঠি মারফত এই ‘হ্যাকিং’-এর কথা জানতে পেরেই ওই যুবতী আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শে রাজ্য সাইবার অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন।
তিন বছর ধরে শুনানি চলার পরে সম্প্রতি রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল বা সাইবার আদালত। আদালতের নির্দেশ, রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে এবং তা আদালতকে জানাতে হবে লিখিত ভাবে। এই নির্দেশ যাতে যথাযথ ভাবে পালন করা হয়, তা দেখতে হবে হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy