Advertisement
E-Paper

ভোরে গেট বেঁকে তোড়ে বেরোল জল

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের সেচ দফতর ২০১৮-র মাঝামাঝি এক নম্বর-সহ ব্যারাজের ১১টি গেট সংস্কারের কাজ শুরু করে। সেচ দফতরের খবর, ইতিমধ্যেই সাতটি গেট বদলানো হয়েছে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১০
দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর গেট ভেঙে যাওয়ার পরে জলস্রোত। (ইনসেটে) ব্যারাজের গেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ মশান এবং বিকাশ মশান

দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর গেট ভেঙে যাওয়ার পরে জলস্রোত। (ইনসেটে) ব্যারাজের গেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ মশান এবং বিকাশ মশান

একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে রাজ্যের সব বাঁধের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছিল সরকার। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজকর্মও শুরু হয়ে যায়। এরই মধ্যে দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর গেটটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তা মেরামত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘জরুরি ভিত্তিতেই কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, রবিবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর গেটটি বদলে ফেলা যাবে,’’ বলেন সেচ দফতরের এক কর্তা।

দুর্গাপুর ব্যারাজে মোট ৩৪টি গেট রয়েছে। তার মধ্যে জলপ্রবাহের নীচে রয়েছে ১০টি এবং বাকি ২৪টি গেট রয়েছে উপরের স্তরে। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বাঁকুড়ার দিকের ৩১ নম্বর গেট থেকে হুহু করে জল বেরোতে দেখা যায়। আচমকা জলের তোড়ে ভেসে যায় কয়েকটি নৌকা ও জাল। সেচ দফতরের সমীক্ষা বলছে, ৩১ নম্বর গেটটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সেটির জলের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমে গিয়েছিল অনেকটাই। এ দিন ভোরে গেটের একাংশ ফেটে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে জলের চাপে পুরো গেটটিই বেঁকে যায়। ১৯৫৫-য় ওই বাঁধ তৈরির পরে দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ হয়নি। ২০১৭-য় এক নম্বর গেট ভেঙে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের সেচ দফতর ২০১৮-র মাঝামাঝি এক নম্বর-সহ ব্যারাজের ১১টি গেট সংস্কারের কাজ শুরু করে। সেচ দফতরের খবর, ইতিমধ্যেই সাতটি গেট বদলানো হয়েছে।

গেট-বিভ্রাট সম্পর্কে বক্তব্য জানতে সেচ দফতরের এসডিও (ব্যারাজ) গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার বার ফোন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। এসএমএসেরও উত্তর মেলেনি রাত পর্যন্ত। তবে সেচ দফতরের বাস্তুকার দেবাশিস পড়ুয়া বলেন, ‘‘ব্যারাজ জলশূন্য করার পরে মেরামতি শুরু হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’ জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি জানান, ব্যারাজের জল বার করার জন্য অন্য কয়েকটি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। মোট পাঁচটি গেট খুলে জল বার করা হচ্ছে। রাতের মধ্যে জল পুরোপুরি বেরিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দুর্গাপুর ব্যারাজ

•তৈরি: ১৯৫৫-য়

•মোট গেট: ৩৪টি

•যেখানে বিপত্তি: ৩১ নম্বর গেট।

•কখন: শনিবার, ভোর সাড়ে ৫টায়।

•কেন ঘটনা: তৈরির পরে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কাজ শুরু ২০১৮-য়। রাজ্য সরকারের সেচ দফতর কাজটি করছে। যে গেটে বিপত্তি, অনুমান সেটির জলের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। ফলে গেটের একাংশ ফেটে গিয়ে বিপত্তি ঘটেছে। এর পরে জলের চাপে পুরো গেটটিই বেঁকে গিয়েছে।
বাকি গেটগুলির অবস্থা

•২০১৭-র ২৪ নভেম্বর ভেঙেছিল ১ নম্বর গেট। সেটি-সহ ছ’টি গেট বদলানো হয়েছে।

•৩১ নম্বর-সহ আরও ছ’টি গেট বদলানো হবে।

•বাকি গেটগুলির সংস্কারকাজ চলছে।

বিশেষজ্ঞ সংস্থার কাছ থেকে বিভিন্ন বাঁধের স্বাস্থ্য-তথ্য পেয়ে দুর্গাপুর, তিস্তা ব্যারাজ, মশানজোড় ও কংসাবতী জলাধার সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। সরকারি সূত্রের খবর, তিস্তা ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শেষ। মশানজোড়ে স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কাজ চলছে। দুর্গাপুর ব্যারাজেও স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান এক আধিকারিক।

Mamata Banerjee Durgapur Barrage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy