মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—ফাইল ছবি।
মেধা নয়, টাকার বদলে কলেজে ভর্তি! বাংলায় এমন সংস্কৃতির ইতি চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধেই কলেজে কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করানোর উঠেছে। তাই তিনি বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। ইতিমধ্যে পুলিশ-প্রশাসনকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন, দল না দেখে তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
নির্দেশ গিয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের কাছেও। সেখানে বলা হয়েছে, ভর্তির সময় কলেজের সামনে পুলিশ মোতায়েন রাখতে হবে। প্রয়োজনে সাদা পোশাকেও থাকবে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফে অভিযোগ জানানোর জন্য দুটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরদুটি হল ৮৪২০৭৫৮৯৯৪ ও ৬২৯০৯৬১১২১। রয়েছে ই-মেল আইডিও। সেটি হল kolkatapolice120@gmail.com।
কলেজ কর্তৃপক্ষদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও মতেই বহিরাগতরা কলেজের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। পড়ুয়াদের পরিচয়পত্র পরীক্ষার পরেই তবে কলেজে ঢুকতে পারবেন তাঁরা।
এর পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পার্থবাবু বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এখানে এ সব চলতে পারে না। আমি পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কেউ যদি আপনাদের কাছে টাকা চায়? সঙ্গে সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং থানায় অভিযোগ জানান। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও অভিযোগ জানাতে পারেন। এর শেষ দেখে আমরা ছাড়ব।”
আরও পড়ুন: শিক্ষার মান পড়েছে, মত কর্তাদেরও
একই সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী জয়া দত্তের গলাতেও। তিনি বলেন, “কেউ দলের নাম কাজে লাগিয়ে নিজের পকেট ভর্তি করলে, বরদাস্ত করা হবে না। গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি দেখছি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করলেই তোলাবাজি করা যাবে না।”
গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা বলা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি অন্য। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুব নেতাদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “বাড়াবাড়ি করলে দল থেকেই বের করে দেব।” তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে কাউন্সেলিংয়ের দিন তাঁর দলেরই দুই গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এর পরেই কলেজে কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য ৩০ থেকে এক লাখ পর্যন্ত টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: ভূগোলে ৬৫০০০, ইংরেজি ১৬০০০, হাজার হাজার টাকা দিলেই মিলবে সিট!
শ্যামবাজারের কাছে মণীন্দ্র কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তির ঘটনা সামনে আসে। গ্রেফতার হন রীতেশ জয়সওয়াল ও লালসাহেব গুপ্তা নামে দু’জন। কলেজে ভর্তির জন্য সঞ্জীব দাসের কাছ থেকে রীতেশ এবং লালসাহেব টাকা দাবি করে। প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন সঞ্জীব তাকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। রীতেশ শ্রীশচন্দ্র কলেজের পড়ুয়া। লালসাহেব শ্রীশচন্দ্র কলেজের প্রাক্তনী। আশ্চর্যের বিষয় হল, জয়া দত্তের সঙ্গে দু’জনের ছবিও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy