Advertisement
E-Paper

পাহাড়েও শাখা খুলবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর

জিটিএ এবং রাজ্য সরকারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পরস্পরের উপরে চাপ বজায় রাখল তৃণমূল ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এক দিকে, দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের শাখা খোলার কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, গ্রামোন্নয়ন দফতরের সব কর্মসূচি এবং বিডিওদের নিজেদের অধীনে চেয়ে দাবি জানালেন জিটিএ প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে স্পষ্ট হয়ে গেল, পাহাড়ে প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে চায় না কোনও পক্ষই। তবে প্রকাশ্যে সম্প্রীতিই বজায় রাখছে দু’দল।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৫
ফুলের বাগানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিম্পঙের ডেলোতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ফুলের বাগানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিম্পঙের ডেলোতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

জিটিএ এবং রাজ্য সরকারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পরস্পরের উপরে চাপ বজায় রাখল তৃণমূল ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এক দিকে, দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের শাখা খোলার কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, গ্রামোন্নয়ন দফতরের সব কর্মসূচি এবং বিডিওদের নিজেদের অধীনে চেয়ে দাবি জানালেন জিটিএ প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে স্পষ্ট হয়ে গেল, পাহাড়ে প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে চায় না কোনও পক্ষই। তবে প্রকাশ্যে সম্প্রীতিই বজায় রাখছে দু’দল। রোশন গিরির নেতৃত্বে মোর্চা নেতারা বৈঠকের আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন। আর মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, পুজোর পরে জিটিএ-র সঙ্গে যৌথ ভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে রাজ্য সরকার।

মঙ্গলবার কালিম্পঙের সার্কিট হাউসের বৈঠকে মোর্চা নেতা তথা জিটিএ-র সদস্য রোশন গিরির নেতৃত্বে জিটিএ-এর সদস্যরা বৈঠকে যোগ দেন। প্রত্যাশা মতোই পাহাড়ে প্রশাসনের বিনিয়ন্ত্রণের উপরে জোর দেন তাঁরা। রাজ্য সরকার থেকে বিভিন্ন দফতর জিটিএ-র হাতে তুলে দেওয়া, জিটিএকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া এবং আগামী অক্টোবরের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার দাবি করেন জিটিএ সদস্যরা। ঘণ্টা দেড়েক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে রোশন বলেন, “বেশ কিছু দাবি রেখেছি। আগের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার রিপোর্টও চেয়েছি। জিটিএতে তফসিলি জাতি, উপজাতির সংরক্ষণ চালু করার দাবিও জানানো হয়েছে।”

বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের কোনও আধিকারিকই অবশ্য কথা বলতে রাজি হননি। স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সদর্থক বৈঠক হয়েছে, এতটুকু বলতে পারি।”

তবে জিটিএ সদস্যদের দীর্ঘদিনের একটি দাবিতে এ দিন সাড়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রোশন গিরির নেতৃত্বে মোর্চার প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার ডেলোতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের পাওনা ৬৩ কোটি টাকা এত দিন হাতে রেখেছিল রাজ্য। মোর্চা নেতাদের সঙ্গে কথার পরে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “এক সময়ের গোর্খা হিল কাউন্সিলের হাতে থাকা অর্থ থেকে ৬০ কোটি টাকা জিটিএকে দেওয়া হবে।” এ ছাড়া কার্শিয়াঙে পিপিপি মডেলে একটি মেডিক্যাল কলেজ হবে বলেও ঘোষণা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “দশমীর পরে আবার পাহাড়ে আসব আমি। সে সময় জিটিএ-এর সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।”


মোর্চা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

জিটিএকে নিয়ে যৌথ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এবং হিল কাউন্সিলের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মোর্চার এক শীর্ষ নেতা বলেন, “রাজনীতিতে সব সময়েই চাপের খেলা চলে। প্রশাসনিক স্তরে জিটিএ চুক্তি মেনে রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া হবে। আবার রাজনীতিও নিজের জায়গায় থাকবে।”

মোর্চা এবং দার্জিলিঙের রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, পাহাড়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের শাখা খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার পাল্টা হিসেবে জিটিএ নেতারা কেন্দ্রের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছে। তবে রাজ্য-মোর্চা দু’পক্ষই এ দিন অন্তত প্রকাশ্যে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছে। জিটিএ-প্রধান বিমল গুরুঙ্গ বর্তমানে দিল্লি রয়েছেন। মোর্চা সূত্রের খবর, সেখানে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে জিটিএ-র উন্নয়ন নিয়ে দাবি জানাচ্ছেন। তাঁদের আশা, কেন্দ্রীয় সরকারের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তাঁরা বাড়তি সুবিধে আদায় করতে পারবেন। জিটিএ এলাকায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা শুরু করা-সহ অন্যান্য বিষয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জিটিএ-র সদস্যরা এ দিন দাবি করেছেন।

প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সমালোচনা করে বলেন, “জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী রাজ্যের ৯০ শতাংশ দফতর জিটিএ-র দায়িত্বে থাকবে। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙে অফিস খুলে কী করবেন?” ত্রাণ তহবিলের টাকা সরাসরি বিলি না করে জিটিএ-এর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

(সহ প্রতিবেদন: রেজা প্রধান)

kishore saha reza pradhan mamata bandyopadhyay chief ministers office gta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy