Advertisement
E-Paper

নার্সিংহোম থেকে শিশু বিক্রি, ধৃত ৫

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম গৌতম চন্দ, তাঁর স্ত্রী দীপা, রঞ্জিত দে, রঞ্জিতা রায় ও মনোজ বিশ্বাস। ধৃতদের শনিবার বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক মনোজ ও রঞ্জিতকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের পাঠানো হয়েছে জেল হেফাজতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৬
অশোকনগরের সেই নার্সিংহোম। ছবি: সুজিত দুয়ারি

অশোকনগরের সেই নার্সিংহোম। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নার্সিংহোমের আড়ালে চলছিল শিশু বিক্রির কারবার। শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পুলিশ এক দম্পতি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। অশোকনগরের যে নার্সিং‌হোম থেকে শিশু বিক্রি করা হত বলে অভিযোগ, সেটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম গৌতম চন্দ, তাঁর স্ত্রী দীপা, রঞ্জিত দে, রঞ্জিতা রায় ও মনোজ বিশ্বাস। ধৃতদের শনিবার বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক মনোজ ও রঞ্জিতকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের পাঠানো হয়েছে জেল হেফাজতে।

এর আগে বাদুড়িয়ার একটি নার্সিংহোম থেকে শিশু বিক্রির কারবারের খোঁজ মিলেছিল। ওই চক্রের জাল ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্যের নানা প্রান্তে। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। অশোকনগরে ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

কী ভাবে শিশু বিক্রি কাণ্ডের হদিশ পেল পুলিশ?

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এগারো দিনের অসুস্থ শিশুকন্যাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন গৌতম ও দীপা। শিশুটির শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। এসইনসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। কিন্তু ভর্তির সময়ে শিশুটির জন্মের শংসাপত্র, কোথায় কবে সে জন্মেছে— সে সব নথি দেখাতে পারেননি ‘বাবা-মা’। এতেই সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ পুলিশকে বিষয়টি জানান।

গৌতম-দীপাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে অশোকনগরের নার্সিংহোম থেকে কিনেছিলেন তাঁরা। উনিশ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হলেও এত দিন ছিলেন নিঃসন্তান।

হাবড়া থানার আইসি গৌতম মিত্রের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর রেলগেট এলাকায় ‘বনানী’ নামে ওই নার্সিংহোমে যান তদন্তকারীরা। গ্রেফতার করা হয় নার্সিংহোমের কেয়ারটেকার রঞ্জিত, মালিক রঞ্জিতা ও চিকিৎসক মনোজকে। ধরা পড়েন গৌতম-দীপাও।

পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি গৌতম ও দীপা সন্তান দত্তক নেবেন বলে ঠিক করেন। যোগাযোগ করেন এক আত্মীয়ের সঙ্গে। তাঁর মাধ্যমে পৌঁছে যান নার্সিংহোমের পাশেই একটি চায়ের দোকানে। দোকান চালান এক মহিলা। তিনি নার্সিংহোমের কেয়ারটেকার রঞ্জিতের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন গৌতমদের। গৌতমদের দাবি, তাঁরা আইন মেনেই দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হবে। দিন দশেক আগে এক দিন বয়সের শিশুকন্যাটিকে হাতে পান গৌতম-দীপা। তাঁদের দাবি, এ জন্য ৬০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল নার্সিংহোমকে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, মনোজ হাতুড়ে। সে ওই নার্সিংহোমে বেআইনি ভাবে গর্ভপাত করায়। অনেক সময়ে শিশু জীবিত থাকে। তাদেরই বিক্রি করে দেওয়া হয়। গৌতম-দীপাদেরও এমনই এক শিশুকে দেওয়া হয়েছিল। তার মায়ের খোঁজ করছে পুলিশ। যে দু’জনের মাধ্যমে নার্সিংহোমের খবর পেয়েছিলেন গৌতমরা, সেই দু’জন এ দিন আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন।

Child Selling Child Selling Racket Nursing Home Ashoknagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy