শিশু পাচারের সঙ্গে আয়াদের একাংশের নাম জড়িয়ে হইচই চলছে রাজ্যে। দিন কয়েক আগে শিশু বিক্রির চেষ্টা করার অভিযোগে ধরা পড়েছে জেলার এক নার্সিংহোমের দুই আয়া। শনিবার সেই বর্ধমানেরই এক হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে অন্যের শিশু নিয়ে বেরনোর সময় এক মহিলাকে আটকে দিলেন যাঁরা, তাঁরাও পেশায় আয়া-ই।
কালনা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ থেকে নদিয়ার বাহিরচরের এক মহিলা এক সদ্যোজাতকে নিয়ে বেরোতে গিয়ে আয়াদের কাছে বাধা পান। শিশু চুরির চেষ্টা করার অভিযোগে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এসডিপিও (কালনা) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। তবে এ দিন ওই আয়ারা না আটকালে বাচ্চাটার কী হতো বলা মুশকিল।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরের বাসিন্দা টুসি হালদার দিন চারেকের শিশুকন্যাকে নিয়ে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। সকাল ৮টা থেকে ৯টা রোগীদের সঙ্গে দেখা করার সময়। এ দিন সেই সময় টুসিদেবীর মা ঝর্না মল্লিক দেখা করতে আসেন। টুসিদেবী জানান, তখন তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। হাসপাতালের কর্মীরা ওয়ার্ডে খাবার দিতে এসেছিলেন। তা নিতে যান তাঁর মা। সেই সুযোগে ওই মহিলা বিছানা থেকে মেয়েকে তুলে চাদরের মধ্যে জড়িয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে তাঁর অভিযোগ।
মহিলার হাবভাব দেখে সন্দেহ হয় ওয়ার্ডের দুই আয়া সুধা মণ্ডল ও সরস্বতী দাসের। তাঁদের কথায়, ‘‘ওই মহিলা অচেনা। চাদর জড়িয়ে এমন ভাবে হাঁটছিলেন, দেখে মনে হল, কিছু লুকোচ্ছেন। তাই আটকাই।’’ কথায়-কথায় ভিড় জমে। অনেক প্রসূতিই দাবি করেন, ওই মহিলা তাঁদের কাছে গিয়েও বাচ্চাকে আদর করে ভাব জমানোর চেষ্টা করছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ মহিলাকে আটক করে।
এর পরেই হাসপাতাল চত্বরে কালনার ধর্মডাঙার এক মহিলাকে শিশু চুরিতে যুক্ত সন্দেহে কিছু লোক মারধর করে। ওই মহিলা পরে জানান, তিনি হাসপাতাল লাগোয়া একটি বাড়িতে কাজ করেন। গোলমাল শুনে ভিতরে ঢুকেছিলেন।
বহিরাগতদের ঢোকা ঠেকাতে কালনা হাসপাতালে রক্ষী আছে। গেট-পাস দেখে পরিজনদের ওয়ার্ডে যেতে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তার পরেও মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা কী ভাবে প্রসূতি বিভাগে ঢুকলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের দাবি, রক্ষীদের নিষেধ সত্ত্বেও কিছু রোগীর পরিজন জোর করে ওয়ার্ডে ঢোকেন। তাই ভিড় জমে যায়। হয়তো তারই সুযোগ নিয়েছেন ওই মহিলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy